Showing posts with label BIOLOGY. Show all posts
Showing posts with label BIOLOGY. Show all posts

Monday, November 5, 2018

বিবর্তনের ফলে প্রাণীরা কী ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে?


চিত্রঃ১(প্রাণীরা বিবর্তনের ফলে আকৃতিতে ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে)
৮০ ফুট দৈর্ঘের সাপ,৪০ ফুট দৈর্ঘের কুমির কিংবা ২৬ ফুট চওড়া পাখা বিশিষ্ট পাখি!কী মনে হয়,এসব প্রাণীর অস্তিত্ব থাকা কী অসম্ভব?হ্যাঁ,এখনকার জন্য অসম্ভব হলেও সেই ৪৫ মিলিয়ন বছর আগে কিন্তু এদের অস্তিত্ব ছিল। ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে অতিকায় ডাইনোসর দের বিলুপ্তির পর এরা সুযোগ পেয়ে অতিকায় হয়ে ওঠেছিল।কিন্তু এ ধারা চলমান থাকেনি,প্রজাতিগুলো বিবর্তনের ধারায় কেন জনি আকারে ক্রমশ ছোট হয়ে আসতে থাকে(মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে চলমান)।
কী এমন হয়েছিল যার ফলে প্রাণীদের আকার এমন ছোট হতে শুরু করলো এবং কী কারণে সেই সময়ে(৪৫ মিলিয়ন বছর আগে) প্রাণীগুলো এতো অতিকায় হতে পেরেছিল?
চিত্রঃ-২(ডাইনোসর)
জীবাশ্মবিদ এবং জীববিজ্ঞানীরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এ বিষয় নিয়ে নিজেদের গবেষণার অনেক অনুকল্প উত্থাপন করেছিলেন তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল Cope's Rule যেখানে বলা হয়েছে,“প্রাণীগুলো বিবর্তনের ধারায় ক্রমশ বড়ই হতে থাকে।”কিন্তু অনেক বছর পর Jablonski নামের আরেক জীববিজ্ঞানী জনপ্রিয় এই থিওরিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।তিনি তার দীর্ঘ ১০ বছরের পর্যবেক্ষণ থেকে এবং ১০০০ প্রজাতির উপর ৬০০০ পরীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তেই আসেন যে,“There is no more tendency for species to become bigger as they evolve.”বুঝলেন তো,Cope's Rule ভুল ছিল এবং Jablonski তার নতুন তত্ত্ব দিয়ে তা শুধরিয়ে দেন।তার মতে, বিবর্তনের ধারায় প্রাণীগুলো আকৃতিতে বড় নয় বরং আকৃতি ছোট রাখার প্রতিই বেশি আগ্রহী এবং এর বেশ কিছু যৌক্তিক কারণ ও তিনি দেখিয়েছেন।আকৃতি বড় হলে প্রধান যে সমস্যাগুলো হয়ঃ- 
♦বেশি খাদ্য তথা শক্তির প্রয়োজন হয়
♦প্রজনন শ্লথ বা মন্থর হয়
♦শিকার,চলাফেরা ও ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা হয়
অপরদিকে এর বিপরীত সুবিধাগুলোই ছোট প্রাণীরা পেয়ে থাকে যা তাদের অভিযোজনে অন্যতম সহায়ক।তাই সেসময় থেকেই প্রাণীকুল(Biota) বুঝতে শুরু করেছিল যে ছোট আকৃতিই তদের জন্য সহায়ক কারণ গণবিলুপ্তিতে(Mass Extinction) বড় প্রাণীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির প্রাণীরা নিজেদের বাঁচাতে পারতো এবং পরবর্তীতে দ্রুত অভিযোজিত হতে পারতো।মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে বিবর্তনের এতো ধাপ পেরিয়ে আজকের প্রজাতিগুলোর দিকেই দেখুননা একবার,তারা কত ধূর্ত অথচ আকৃতিতে পূর্বেকার প্রাণীগুলোর চেয়ে বহুগুণ ছোট।

এখন প্রশ্ন হলো,এভাবে আকার হ্রাস পাওয়ার ক্ষেত্রে কী কেবল প্রাণীদের তীব্র আকাঙ্ক্ষাই দায়ী নাকি অন্য কোন প্রভাবক আছে এক্ষেত্রে?
চিত্রঃ-৩(আকারের ক্রমহ্রাস)
নিঃসন্দেহে আকাঙ্ক্ষা একটা বড় কারণ কিন্তু আরো বেশ কিছু কারণ আছে যা প্রাণীদের এই দৈহিক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছিল।তবে আগে বলে নিই সেসময়ের(Prehistoric Time) বড় প্রাণীগুলো কেন বা কীভাবে এত অতিকায় হয়ে ওঠেছিল;নিশ্চয় এর বিপরীত কারণগুলোই হবে ছোট প্রাণীদের ছোট হওয়ার কারণ।
এবার দেখা যাক অন্যান্য সেই কারণগুলোঃ-
★ বায়ুতে Oxygen এর মাত্রা-সেসময় বায়ুতে প্রায় ৩৮% অক্সিজেন ছিল যা প্রাণীদের Biomechanical Limit অতিমাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং এটি তাদের বৃদ্ধি দ্রুততর করতো, দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সুযোগ ও পেত।
★ যথেষ্ঠ খাবার ছিল(Food Resources)
★ প্রাণীদের আবাসের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হতোনা,অনেক জায়গা ছিল(Land Mass)
★ নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা ছিল
★ পরিবেশে প্রচুর বনভূমি এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক অবস্থা বিরাজমান ছিল ফলশ্রুতিতে প্রাণীরা নিজের মতো করে স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়ে উঠত।
চিত্রঃ-৪(প্রাগৈতিহাসিক অতিকায় প্রাণীরা)
এবার ভেবেই নিন কেন আজকের প্রাণীরা আকৃতিতে ছোট হতে একপ্রকার বাধ্য।

এখন আরেকটা প্রশ্নের উদয় হয় এখানে,কখনো যদি অতীত সেই পরিবেশ প্রাণীরা ফিরে পায় তবে কী তারা আগের মতো অতিকায় হয়ে উঠবে?

উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ এবং না(বিতর্কিত এবং অনিশ্চিত)।এ ধরনের বিবর্তন হতে প্রায় মিলিয়ন মিলিয়ন বছর লেগে যায় এবং অতীত সেই প্রাকৃতিক অবস্থাও আর ফিরে আসবেনা তবে কিছু কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে(লক্ষ-কোটি বছর+) কিছু প্রাণীর বিবর্তন নিশ্চিত এমনকি মানুষের ক্ষেত্রেও।
অনেক লম্বা সময়ই বটে,জানিনা হয়ত সেদিন আসতে আসতে আমরা হয় মঙ্গল গ্রহের বাসিন্দা(Martian) হবো না হয় বিলুপ্ত(Extinct) হয়ে যাবো।
চিত্রঃ-৫

সারকথা

বিবর্তনের ধারায় প্রাণীদের আকার ছোট বা বড় হওয়া অনেক নিয়ামক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।একটি উপযুক্ত পরিবেশের উপরই সব নির্ভর করছে।Prehistoric Era তে প্রাণীরা অতিকায় ছিল কারণ তারা উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে প্রাণীরা বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নেয় এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা ও পরিবেশের বিরুপতা তাদেরকে ধীরে ধীরে ছোট আকৃতি পেতে সাহায্য করে যা অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক ছিল।বিবর্তনের প্রভাব সব প্রাণীর ক্ষেত্রে একই ছিলোনা অবশ্য এর কিছু কারণও ছিল।জলভাগের(Aquatic) প্রাণীর চেয়ে স্থলচর প্রাণীদের(Terrestrial) উপর বিবর্তনের প্রভাব প্রকট ছিল।


ধন্যবাদ
লেখকঃ-Myin Uddin

কমেন্টে নিজেদের প্রশ্ন করতে পারেন


Friday, June 1, 2018

চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্ধকার ইতিহাস!

আমাদের চারপাশের ঝাঁ চকচকে সভ্যতার পেছনেই রয়েছে নিকষ অন্ধকার। এবং আশ্চর্যজনকভাবে এই আলোকোজ্জ্বল সভ্যতা বিনির্মাণে সেই অন্ধকারটুকুর অবদানও কম নয় মোটেই।তাই আজ জানবো চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে রচিত হওয়া অন্ধকার ইতিহাস এর গল্প!


অক্টোবর ১০, ১৮২৪। লন্ডনের হাসপাতালের বিছানায় নিথর হয়ে শুয়ে থাকা ভদ্রলোক টের পেলেন কান্নার আওয়াজ; সেইসাথে কানে গেল নার্সের অস্পষ্ট উচ্চারণ, "তিনি আর নেই।" একটু পরেই তিনি অনুভব করলেন কবরে নামানো হচ্ছে তার কফিন, মাটি দেয়া হচ্ছে তার ওপর। তিনি প্রাণপণে চেষ্টা করলেন কিছু করার। কিন্তু না, তার দুর্বল শরীর আর এঁটে থাকা কফিন কোনো সুযোগই দিল না তাকে। এবার তিনি ভাবলেন, হয়তো সত্যিই মরে গেছেন।

ঠিক একই সময়ে রাতের অন্ধকারে শবযাত্রা অনুসরণ করছিল দুজন লোক, কালো কাপড়ে সর্বাঙ্গ মোড়ানো। অন্তেষ্টিক্রিয়া শেষে জায়গাটা ফাঁকা হতেই কাজে নেমে পড়লো তারা। ১৫ মিনিটের মধ্যেই কফিন থেকে বের করে আনলো দেহটা।

ব্যবচ্ছেদ কক্ষে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে গতরাতে আনা নতুন দেহটা রাখা হলো টেবিলে। চারপাশে উৎসুক চিকিৎসা বিজ্ঞানের নবীন শিক্ষার্থীরা। ডেমনস্ট্রেটরের ছুরিটা শবের চামড়া ভেদ করে পাঁজরে আঘাত করতেই বিপত্তিটা ঘটলো। মৃতের সারা শরীরে বিদ্যুতের মতো কম্পন খেলে গেল, সেই সঙ্গে ভয়ঙ্কর চিৎকার। ব্যাপার দেখে ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে গেল ব্যবচ্ছেদ কক্ষের শিক্ষার্থীরা।

না, এটা কোনো হরর মুভির কাহিনী নয়। ঘটনাটা সম্ভবত সত্যিই ঘটেছিল লন্ডনে, ১৮২৪ সালে এবং বর্ণনাটা সেই জীবন্ত লাশ হয়ে যাওয়া লোকটার জবানীতেই পাওয়া যায়। আর যেহেতু মৃত্যু নিশ্চিত হবার কোনো আধুনিক পদ্ধতি তখন ছিল না, তাই এমন ভুল মাঝে মধ্যেই ঘটতো। তবে আমার আজকের লেখার বিষয়বস্তু সেটা না, বরং আজকের বিষয় সেই দুজন লোক, যারা শবযাত্রার পিছু নিয়েছিল এবং মৃতদেহটি বিক্রি করেছিল কোনো এক মেডিকেল কলেজের এনাটমি বিভাগে।

অষ্টাদশ এবং ঊনবিংশ শতাব্দতে লন্ডন এবং তার আশেপাশে বেসরকারি মেডিকেল স্কুলের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এসব স্কুলের জনপ্রিয়তার কারণ ছিল মূলত সত্যিকার মানবদেহ ব্যবচ্ছেদের সুযোগ। কিন্তু সমস্যা হলো সে সময় সবার মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদের অনুমতি ছিল না। কেবল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের দেহই সরকারি মেডিকেল স্কুলগুলোতে দেয়া হতো। সপ্তদশ শতকের বিখ্যাত এনাটমিস্ট ওয়ার্নার রলফিংক একাজে এত প্রবাদতুল্য ছিলেন, যে অপরাধীরা 'rolfincked' হবার হাত থেকে বাঁচতে চাইতো। সে যাই হোক, মৃতদেহের চাহিদা বাড়লেও সে সময় মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছিল। ফলে বাধ্য হয়েই এনাটমির শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা বেছে নেন এক অবৈধ পথ। সেই সঙ্গে রচিত হয় অন্ধকার জগতের নতুন অধ্যায়, শব বাণিজ্য।

শবচোরদের লাশ চুরির পদ্ধতি ছিল মূলত দুরকম। সরাসরি কবর খুঁড়ে লাশ বের করা। অথবা কবর থেকে ১৫/২০ ফুট দূরে গর্ত করে সেখান থেকে সুরঙ্গ তৈরি করে লাশ বের করা। এর একটা সুবিধা ছিল খুব ভালো করে খেয়াল না করলে কারো তেমন সন্দেহ হতো না। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়না। তারা বিভিন্নজনের কাছে বিভিন্ন পরিচয়ে ব্যবসা করতো। তাদের মধ্যে জোসেফ ন্যাপল নামক একজন নিয়মিত ডায়েরি রাখত। তার ডায়েরির ২টি পৃষ্ঠা এরকম--

13th January 1812
Took 2 of the above to Mr Brookes & 1 large & 1 small to Mr Bell. Foetus to Mr Carpue. Small to Mr Framton. Large small to Mr Cline. Met at 5, the Party went to Newington. 2 adults. Took them to St Thomas’s.
26th August 1812
Separated to look out, the party met at night…Willson, M. & F. Bartholm, me, Jack and Hollis went to Isl [ingto]n. Could not succeed, the dogs flew at us, afterwards went to [St] Pancr [a]s, found a watch planted, came home.

সেসময় লাশ চুরির ঘটনা এতটাই নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে চুরির হাত থেকে প্রিয়জনের দেহ বাঁচাতে নানারকম ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়। কবরস্থানগুলোতে পাহারা বসানো হয়, কাঠের কফিনের বদলে লোহার কফিন ব্যবহার শুরু হয়, কবরের ওপর লোহার কাঠামো বসানো হয়। অনেক গোরস্থানে 'মর্ট হাউস' নামে বিশেষ জায়গা ছিল, যেখানে মৃতদেহগুলো পঁচে যাবার আগ পর্যন্ত পাহারা দিয়ে রাখা হতো। কিছু ব্যবস্থা ছিল আরো ভয়ঙ্কর। কবরস্থানে তৈরি করা হতো 'বুবি ট্র্যাপ', অনেকটা ল্যান্ড মাইনের মতো; আর কিছু কিছু কফিনে থাকতো স্প্রিং লোডেড গান, কফিন খুললেই ছুটে যেত গুলি।
না, এবার আর চুরি নয়। খুন। এই অন্ধকার ইতিহাসের ভয়াবহতম ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮২৭ সালে, উইলিয়াম বার্ক ও উইলিয়াম হেয়ারের হাতে।বার্ক স্কটল্যান্ডে ঝুট কাপড়ের ব্যবসা করতো আর হেয়ার তার বাড়ি ভাড়া দিত। হেয়ারের একজন ভাড়াটে হঠাৎ মারা গেলে তারা দুই বন্ধু তার দেহ বিক্রি করে ভাড়ার টাকা উসুল করার পরিকল্পনা করে। দেহটা তারা ৭ পাউন্ডের বিনিময়ে বিক্রি করেছিল এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জন ডা. রবার্ট নক্সের কাছে। ডা. নক্স তাদের বলেছিলেন পরবর্তীতে আরো দেহের খোঁজ পেলে তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে।

অফারটা লুফে নিয়েছিল তারা। আরো একজন ভাড়াটে মহিলা কলেরায় আক্রান্ত হলে তারা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তার দেহ ডা. নক্সের কাছে বিক্রি করে ১০ পাউন্ডে, যেহেতু দেহটি অক্ষত ছিল। ১৮২৮ সালে গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা দুজন মিলে মোট ১৬ টি দেহ ডা. নক্সকে সরবরাহ করেছিল। আরো একটা দেহ লুকানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল তাদের বাড়িতে। তারা মূলত তাদের ভাড়াটেদের এবং কিছু বাইরের লোককে ঘুমন্ত অবস্থায় বা ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতো, পদ্ধতিটার নামই পরবর্তীতে হয়ে যায় 'Burking'। এলাকায় রীতিমতো আতংক তৈরি হয়েছিল তাদের কর্মকাণ্ডে।

হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এডিনবারা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডা. নক্সের সম্পৃক্ততা সামনে চলে আসে। পরে অবশ্য তাঁকে অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। উইলিয়াম বার্ককে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় আর হেয়ার কিছুদিন পর জেল থেকে পালিয়ে বেঁচে যায়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বার্কের দেহটি এডিনবারা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়া হয় ব্যবচ্ছেদের জন্যে। আর ব্যবচ্ছেদটি হয়েছিল পাবলিক ডিসেকশন থিয়েটারে, জনগণের উপস্থিতিতে। তার রক্ত ব্যবহার করে একটা চিঠি লেখা হয়, তার কঙ্কাল প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয় আর তার চামড়া দিয়ে একটা বই বাঁধাই করা হয় আর একটা ওয়ালেট তৈরি করা হয়। বার্কের ডেথমাস্ক ও সেই ওয়ালেট এডিনবরার Surgeons’ Hall Museum এ সংরক্ষিত আছে।

১৮৩১ সালে 'লন্ডন বার্কার' নামে আরো একটা গ্রুপ ধরা পড়ে, যারাও একই রকম কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। সমসাময়িক কালে আরো সাতটি চক্র ধরা পড়ে, যারা লাশ চুরির সাথে জড়িত ছিল। ধারণা করা হয় প্রায় দুই শতাধিক চক্র একাজে সম্পৃক্ত ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে থাকে, যেহেতু লাশ চুরির শাস্তি ছিল খুব সামান্য কিছু জরিমানা বা ক'মাসের জেল। জনগণ ফুঁসে উঠতে থাকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। অবশেষে ১৮৩২ সালে পার্লামেন্টে 'Anatomy act' পাস হয়, যেখানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের পাশাপাশি বেওয়ারিশ লাশ ও স্বেচ্ছায় দানকৃত দেহ ব্যবচ্ছেদের অনুমতি দেয়া হয়। ফলে আগের তুলনায় বৈধ মৃতদেহের সরবরাহ অনেকটাই বেড়ে যায়। সেই সাথে কমে যায় শবচোরদের দৌরাত্ম্য।

শববাণিজ্য প্রাথমিকভাবে যুক্তরাজ্য ও স্কটল্যান্ডে শুরু হলেও তা ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন দেশে। 

মৃত্যুর ফেরিওয়ালা: আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ
শবদেহ ব্যবচ্ছেদ আমেরিকায় আইনত ও সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ ছিল। এনিয়ে ডাক্তারদের বিভিন্ন সময় জনগণ ও সরকারের রোষানলে পড়তে হয়। ১৭৬২ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা উইলিয়াম শিপেন ব্যবচ্ছেদের ওপর একটি লেকচার দিয়েছিলেন। পরে ১৭৬৫ সালে একটা গীর্জার কবরস্থান থেকে লাশ চুরি গেলে তাঁকে দায়ী করে উত্তেজিত জনতা তাঁর বাড়িতে আক্রমণ করে। নিউইয়র্কের সিটি হাসপাতালের ডিসেকশন রুমের পাশে খেলার সময় একদল ছেলে একজন মহিলার মৃতদেহ দেখতে পায়, যেটা ছিল তাদের এক বন্ধুর মায়ের, যিনি সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। ঘটনাটি ছেলেটির বাবাকে জানানো হলে সে দলবলসহ হাসপাতালে হামলা করে, যেটি Doctors' Riot নামে পরিচিত। জনগণকে শান্ত করার জন্য মৃতদেহের খোঁজে ডাক্তার, প্রফেসর ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করা হয় ও অনেককে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়। কিছুদিন পর জনগণ সেখানেও হামলা করে। প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ডাক্তারদের সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দিলে হামলাকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয় এবং এতে ৩ জন হামলাকারী নিহত হয়। 
.
১৭৭০ সালে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক জন ওয়ারেন "Spunkers" নামে একটি গুপ্ত এনাটমি সোসাইটি তৈরি করেন, যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে মৃতদেহ সংগ্রহ করে ব্যবচ্ছেদ করতেন। ১৮২৪ সালে ডা. চার্লস নলটন অবৈধ ব্যবচ্ছেদের দায়ে গ্রেফতার হন। দু'মাস পর ছাড়া পেয়ে তিনি জনগণের মধ্যে মরণোত্তর দেহদানের বিষয়ে কুসংস্কার দূর করার জন্য ডাক্তারদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
.
লাশ চুরির বিষয়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ তখনো অব্যাহত ছিল। ১৭৬৫ থেকে ১৮৮৪ পর্যন্ত ডাক্তার ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ওপর প্রায় ২৫টি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলা থেকে বাদ যায়নি মেরিল্যান্ড কিংবা ইয়েলের মতো নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও। সবকিছু মিলিয়ে একটা আইন প্রণয়ন জরুরি হয়ে পড়েছিল। পরে যুক্তরাষ্ট্রে 'Anatomy act' বা 'Bone bill' পাস হয়।
.
ইতিহাসের শেষ অংশটা আমাদের নিজের। বিগত প্রায় ২০০ বছর ধরে বিশ্বের শব ও কঙ্কাল বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আছে কলকাতা, যদিও ১৯৮৫ সালে ভারত সরকার মানবকঙ্কাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। ১৮৫০ এর দশকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ বছরে প্রায় ৯০০ কঙ্কাল প্রক্রিয়াজাত করতো বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য। ১৯৮০'র দশকে কেবল পশ্চিমবঙ্গেই বছরে প্রায় ১ মিলিয়ন ডলারের শববাণিজ্য হত। ২০০৭ সালে পুলিশ বর্ধমান থেকে শতাধিক কঙ্কালসহ একটি চক্রকে আটক করে, যারা জেলার বিভিন্ন মুসলিম কবরস্থান থেকে লাশ চুরি করতো। ২০০৯ সালে বিহারে কামাল শাহ নামে আরো একজন গ্রেপ্তার হয় ১০টি মাথার খুলি ও ৬৭টি পায়ের হাড়সহ। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা কঙ্কালগুলো মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পাচার করত ভারত, নেপাল ও ভুটানের বৌদ্ধ মঠগুলোতে, যেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে খুলিগুলো পানপাত্র আর ফিমারগুলো 'Blow-horn' হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ভারতীয় তান্ত্রিক সমাজেও রয়েছে মানবকঙ্কালের ব্যাপক চাহিদা। 
.
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশের অনেকগুলো চক্র কঙ্কাল চোরাচালানের সাথে জড়িত। ধারণা করা হয় প্রতিবছর প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কঙ্কাল চীন, নেপাল, বাংলাদেশ, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়। ভারতে কঙ্কালগুলো গড়ে প্রায় ৩০০ ডলারে বিক্রি হয়, যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে তার দাম হয় প্রায় ৭০০ থেকে ১৫০০ ডলার। অবশ্য দাম নিয়ে মতভেদ রয়েছে। গতবছর এপ্রিলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে ১৫টি কঙ্কালসহ দুজন গ্রেপ্তার হবার পর একটি সংবাদমাধ্যম রাজশাহীর একজন পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে জানায় ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা অস্থিগুলো মাত্র ৪/৫ হাজার টাকায় সংগ্রহ করা হয়।
.
বাংলাদেশের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ মেডিকেল শিক্ষার্থী পুরনো কঙ্কাল ব্যবহার করেন। অল্প কিছু শিক্ষার্থী কৃত্রিম কঙ্কাল ব্যবহার করেন। আর বাকিরা বিভিন্ন মেডিকেল স্টোর, মেডিকেল কলেজের ডোম বা অন্যান্য চোরাচালান চক্রের কাছ থেকে কঙ্কাল সংগ্রহ করেন। প্রতিবছর ২০০-৩০০ কঙ্কাল দেশের বাইরেও পাচার হয়। সে হিসেবে দেশে মোট কঙ্কালের চাহিদা বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার, যার বেশিরভাগই আসে ভারত থেকে পাচার হয়ে। বাকিগুলো বিভিন্ন কবর থেকে বা মেডিকেল কলেজ মর্গের বেওয়ারিশ লাশ থেকে সংগ্রহ করা হয়।

বাংলাদেশের আইন অনু্যায়ী মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা মৃতদেহের ব্যবসা নিষিদ্ধ। কেবল স্বেচ্ছায় দানকৃত দেহই শিক্ষা বা গবেষণাক্ষেত্রে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। সে হিসেবে আমাদের প্রায় সবার কঙ্কালই অবৈধ। :-) এবিষয়ে তাই একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। 

Tuesday, April 17, 2018

DARWIN WAS WRONG ABOUT US!-আমরা বানরজাতীয় প্রাণির বংশধর নয়!

 আমরা বানরজাতীয় প্রাণির বংশধর নয়!!!

জেনে নাও ডারউইনের বিবর্তনবাদের ভুল ও অযৌক্তিক দিকগুলো...

জানার আছে অনেক কিছু.....Let's Read

It's Totally Wrong !


Evolution isn't true,
because if we evolved from monkeys, how can they still be here?
Stephen Baldwin
বিবর্তনবাদ তত্ত্ব(Theory Of Evolution)অনুসারে পৃথিবীতে সমস্ত জীবজগতের আবির্ভাব হয়েছে একটি সরল এককোষী জীব থেকে– যা “সাধারণ পূর্বপুরুষ” নামে পরিচিত। আর এই এককোষী ব্যাক্টেরিয়ার মতো জীবের আবির্ভাব নাকি হয়েছিল কেমিক্যাল বিবর্তন প্রক্রিয়ায়। প্রাকৃতিক নির্বাচন (Nature Selection-Survival Of The Fittest)যেখানে যারা যোগ্য তারা পরিবেশে উদ্দেশ্যহীনভাবে টিকে থাকে;অন্যদিকে দুর্বল বা অনুপোযুক্তদের বিলুপ্তি হয়। এর মাধ্যমে কালের প্রক্রিয়ায় (মিলিয়ন বছর টাইম স্কেলে) উদ্দেশ্যহীন ও দৈবক্রমে অজৈব পদার্থ থেকে জীবের মৌলিক উপাদান- ডিএনএ ও প্রোটিন তৈরী হয়। তারপর এগুলো মিলিয়ন-মিলিয়ন বছর ধরে ট্রায়াল-এন্ড-এরর (Trial and error) প্রক্রিয়ায় কোনক্রমে হঠাৎ করে জোড়া-তালি লেগে হয়ে যায় এককোষী ব্যাক্টেরিয়ার মতো জীব বা আমাদের আদি-পিতা!

সেই এককোষী জীব থেকে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে উদ্দেশ্যহীনভাবে ও দৈবক্রমে অপরিকল্পিত মিউটেশনের (আকস্মিক জীনগত পরিবর্তন) মাধ্যমে ধাপে ধাপে তৈরী হয়েছে পৃথিবীর সমস্ত প্রজাতি। ডারউইনের সময়ে বিজ্ঞানের অগ্রগতি আজকের মতো ছিল না। সে সময় জীবকোষকে অত্যন্ত সরল মনে করা হতো – ডিএনএ আবিষ্কার তো দূরের কথা। তাই বিজ্ঞানী হিসেবে তার তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি হিসেবে ডারউইন বলে গেছেন যে তার তত্ত্ব প্রমাণের জন্য জীব সৃষ্টির পর্যায়ক্রমিক ধাপ বা ট্র্যানজিশনাল স্পিসিজ দেখাতে হবে। প্রায় ১৬০ বছর ধরে এই স্বপ্নের ট্র্যানজিশনাল স্পিসিজের ফসিল সন্ধানে পৃথিবীর যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কল্পিত “ট্র্যানজিশনাল স্পিসিজ” বা “মিসিং লিঙ্ক”(Missing Link) এর টিকিটিরও সন্ধান পাওয়া যায়নি। যুক্তিবাদের খ্যাতিরে বলা যায় এদের সংখ্যা পৃথিবীতে বিদ্যমান প্রজাতির সংখ্যা থেকে অনেক অনেক গুণ বেশী থাকার কথা। আর তাই বর্তমানে বিবর্তনবাদীরা ফসিল আলোচনা থেকে বিরত থাকতে আপ্রাণ চেষ্টা করে। আর ব্যাখ্যা হিসেবে দেখায় নিও-ডারউইনিজমকে – বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে জেনেটিক সিকোয়েন্সের মিলের সামঞ্জস্যতাকে (Genetic Relatedness or Homology).

কিন্তু মিডলিকি নামের এক জীবাশ্মবিদ তার দীর্ঘ গবেষণায় প্রমাণ করেছে এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতির উদ্ভব সম্ভব নয়। ২০০০ সালে হোমো হ্যাবিলিস (মেরুদণ্ডের উপর সোজা দাঁড়াতে অক্ষম) প্রজাতির একটি চোয়াল এবং হোমে ইরেকটাস (মেরুদণ্ডের উপর সোজা দাঁড়াতে সক্ষম) প্রজাতির একটি সম্পূর্ণ খুলির উপর এই গবেষণা চালানো হয়। এই গবেষণায় এই তত্ত্ব বেরিয়ে আসে যে, হোমে হ্যাবিলিস ও হোমে ইরেকটাস উভয় প্রজাতির বানর ১৫ লাখ বৎসর পূর্বে আফ্রিকায় একই সময় বিচরণ করেছে এবং এদের আয়ু ছিল ৫ লাখ বৎসর। প্রাচীন এই প্রজাতি দু’টি একই সময় বসবাস করলেও একে অন্যকে এড়িয়ে চলতো। কারণ হোমো হ্যাবিলিস ছিল নিরামিষাশী (তৃণভোজী) আর হোমে ইরিকটাস ছিল গোশত ভোজী। তাহলে এটা প্রমাণিত হয় যে, ডারউইনবাদে বর্ণিত হোমো হ্যাবিলিস থেকে হোমো ইরিকটাসের প্রবর্তনের তত্ত্বটি ছিল ভুল। ডারউইনের মতবাদে বলা হয়েছিল যে, হোমো হ্যাবিলিস থেকে হোমো ইরিকটাসের প্রবর্তন হয় এবং হোমো ইরিকটাস থেকে হোমো স্যাপিয়ান্স (মানুষ) প্রবর্তিত হয়। এই গবেষণায় সে মতবাদ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কারণ হোমো হ্যাবিলিস (বানর) এবং হোমো ইরিকটাস (সিমপ্যাঞ্জি) একই সময় পৃথিবীতে বিচরণ করে থাকলে কি করে একে অন্য থেকে প্রবর্তিত হতে পারে।

এবার একটা মজার বিষয় বলি! বিবর্তনবাদ এর ইনপুট এ একটি কালো শিম্পাঞ্জি পরবর্তিতে আউটপুটে গিয়ে একটি সাদা মানুষে পরিনত হচ্ছে! কৃঞাজ্ঞ থেকে সরাসরি শেতাঙ্গ তে পরিনত হয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞানিদের যুক্তি, বানরজাতীয় প্রাণির সাথে মানুষের জীনগত মিল ৯৮% তাই বানর এবং মানুষ একটি কমন জিনোম থেকে উদ্ভব হয়েছে। অর্থাৎ ডিএনএ টেস্ট (ডিএনএ এর মিল থেকে প্রমাণ) করে যেমন সন্তানের বাবার পরিচয় পাওয়া যায়, ঠিক তেমনি মানুষের ডিএনএ এই মিল প্রমাণ করে আমরা বানরজাতীয় প্রাণির বংশধর। আসলে কি তাই, গাণিতিক ভাবে প্রমাণ করা যায় এই মিল কখনো প্রমাণ করে না আমরা বানরজাতীয় প্রাণির বংশধর; বরং এ মিল থাকাটাই স্বাভাবিক।


যেমন ডিএনএতে চারটি ক্ষার পাওয়া যায়, এগুলো হল এডেনিন (সংক্ষেপে A), সাইটোসিন (C), গুয়ানিন (G) এবং থাইমিন (T) । এই চারটি ক্ষার বা বেস দ্বারা তৈরি হয় ডিএনএ কোডিং,যার মধ্যে জীবের সকল প্রকার বৈশিষ্ট্য লিপি বদ্ধ থাকে। অর্থাৎ যেন ৪ টি অক্ষর দ্বারা রচিত এমন এক বিশাল দিক নির্দেশনা, যার দ্বারা পরিচালিত হয় একটি জীবের সমগ্র জীবন, শুধু তাই নয় উক্ত জীবের পরবর্তী বংশধরও পরিচালিত হয় উক্ত নির্দেশনায় (সামান্য কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে)। আর সকল প্রাণের ক্ষেত্রে এই ডিএনএ কোডিং এর রয়েছে এক অভূত পূর্ব মিল। যেমন- বানরজাতীয় প্রাণির সাথে আমাদের ডিএনএ কোডিং এর মিল ৯৮%; আর বিজ্ঞানিরা এই সাদৃশ্য কেই পুঁজি করে জেনেটিক প্রমাণ দিয়ে থাকে আমরা বানরজাতীয় প্রাণির বংশধর। আসলেই কি এই মিল প্রমাণ করে আমরা বানরজাতীয় প্রাণির বংশধর, আমি আসলে এটিই গাণিতিক ভাবে দেখাতে চেষ্টা করব।

মনে করুন, কেউ একটি বিশাল প্রেমের কাব্য রচনা করলো ইংরেজি ভাষায়; আর একজন বিবর্তনের সাপেক্ষে বিজ্ঞানের যুক্তি প্রমাণ উপস্থাপন করে একটি বিশাল বই লিখলও একই ভাষায়। যদিও ২ টি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়, তথাপি লিখা হয়েছে ইংরেজি A থেকে Z পর্যন্ত ২৬ টি অক্ষর দিয়ে; তাই বইগুলোর সমগ্র অক্ষর গুলোকে একটি সরিতে এনে একটির নিচে আর একটি রাখলে দেখা যাবে যে অনেক মিল রয়েছে। যেহেতু ২টি বই-ই লিখা হয়েছে ইংরেজিA থেকে Z পর্যন্ত ২৬ টি অক্ষর দিয়ে (যদিও ডিএনএ কোডিং মিলানো এরকম না)।

উদাহরণ স্বরূপ,

UCEP-Amir Hossain Dobash School = এটি একটি স্কুলের নাম ও

With due respect I would like to inform = এটি অ্যাপ্লিকেশনের শুরুর অংশ।

U C E P A M I R H O S S A I N D O B A S H S C H O O L

W I T H D U E R E S P E C T I W O U L D L I K E T O I

এখনে লক্ষ্য করে দেখুন, ৮ নং কলামে R-R, ১৭ নং কলামের O-O এবং ২৬ নং কলামের O-O অক্ষর গুলো মিলে গেছে। এখানে মোট অক্ষর আছে ৫৪টি এবং এদের মধ্যে মিল রয়েছে ৬টি অক্ষরের, তাহলে এখানে সাদৃশ্যের শতকরা হার প্রায় ১১%।

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, বিষয় বস্তু ও ভাবার্থ যাই হোক; যেহেতু একই প্রতীক ব্যবহার করে তথ্য গুলো লেখা হয়েছে, তাই তাদের মধ্যে যথেষ্ট মিল রয়েছে।

এবার একটু ভিন্ন আঙ্গিকে ভেবে দেখুন, উপরের ২টি বই ইংরেজি ২৬টি প্রতীকের পরিবর্তে মাত্র ২টি প্রতীক ব্যবহার করে লিখেছেন। যেমন কম্পিউটার ০ (শূন্য) আর ১ (এক) ছাড়া কিছুই বোঝেনা। অর্থাৎ সকল কার্য সম্পূর্ণ করে 0 ও 1 ব্যবহার করে। ধরুন আপনি কিবোর্ড এর “A” Key তে ক্লিক করেছেন, কিন্তু প্রসেসর যে ডাটাটি পাবে তাহলো ৮ বিটের একটি বাইনারি ডাটা 01000001। এভাবে A থেকে Z পর্যন্ত প্রতিটি অক্ষরের জন্য ৮ বিটের একটি বাইনারি ডাটা রয়েছে। তাই আপনি মহাকাব্য রচনা করলেও কম্পিউটারে 0 ও1 ই সংরক্ষিত হবে।
আপনি লিখলেন (MONKEY), কিন্তু কম্পিউটার লিখবেঃ-
(01001101 0100111101001110 01001011 01000101 01011001)।
M= 01001101;
O= 01001111;
N= 01001110;
K= 01001011;
E= 01000101;
Y= 01011001;
আপনি লিখলেন (HUMAN), কিন্তু কম্পিউটার লিখবেঃ-
(01001000 01010101 01001101 01000001 01001110)।
H= 01001000;
U=01010101;
M= 01001101;
A= 01000001;
N= 01001110;

প্রথমত:

M O N K E Y
H U M A N
এখন আমরা যদি, উপরোক্ত ভাবে অক্ষর গুলোকে সাজায় তাহলে, কোন কলামের ডাটা গুলোর মধ্যে কোন মিল নেই; এক্ষেত্রে সাদৃশ্য ০%।
কিন্তু,
0100110101001111010011100100101101000101 01011001
0100100001010101010011010100000101001110

বাইনারির ক্ষেত্রে ডাটা গুলোর সাদৃশ্য ৬৩.৬৩% (যদি Y এর বাইনারি ডাটা বিবেচনা করি); Y কে বাদ দিলে মিল ৭০%।

দ্বিতীয়ত:

M O N K E Y
M A N H U
যদি মিলের জন্য, উপরোক্ত ভাবে অক্ষর গুলোকে সাজায় তাহলে, সাদৃশ্য ৩৬.৩৬% (যদিK কে বিবেচনা করি); K কে বাদ দিলে সাদৃশ্য ৪০%।
কিন্তু,
0100110101001111010011100100010101011001
0100110101000001010011100100100001010101

এক্ষেত্রে বাইনারির ডাটা গুলোর সাদৃশ্য ৭২.৭২%% (যদি K এর বাইনারি ডাটা বিবেচনা করি); K কে বাদ দিলে সাদৃশ্য হবে ৮০%।
এ থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে, বিষয় বস্তু ও ভাবার্থ যাই হোক; যদি কোন তথ্য অল্প কয়েকটি প্রতীক দিয়ে প্রকাশ করা হয়, তাহলে তাদের মধ্যে সাদৃশ্য থাকবে অনেক বেশি।
সুতরাং জীবের ডিএনএ এর ডাটা যেহেতু ৪ টি প্রতীক দ্বারা রচিত (সবসময় AT ও CG জোড় তৈরি করে, সুতরাং বইনারি ২ বিট এর সাথে সামঁজস্যপূর্ণ), তাই তাদের মধ্যে সাদৃশ্য থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে এই মিল কোন ভাবেই প্রমাণ করে না আমরা বানরজাতীয় প্রাণির বংশধর। আর যেহেতু সকল প্রাণীর জৈবিক প্রক্রিয়া (বিষয় বস্তু ও ভাবার্থ) একই তাই ৯৮% মিল থাকাটাই যুক্তি যুক্ত (কিন্তু ২% অমিল যে কত কোটি জেনেটিক লেটারস্ এর অমিল তা হয়ত অাপনাদের জানা আছে)৷ এটা আমার কথা নয় গণিতের প্রমাণ।

Theory Of Evolution Is Wrong About Us


বি.দ্রঃ
-স্পেস জনিত সমস্যার কারণে অক্ষর ও বাইনারি ডাটা গুলো কিছুটা স্থানচ্যুত হয়ে গেছে, তাই সাদৃশ্য গুলো স্পষ্ট করে বুঝা নাও যেতে পারে।


Edited By Myin Uddin
basrimyin@gmail.com 
Writer:Faheem Noman
Email:faheem.fahimahmednoman@gmai.com


Monday, April 16, 2018

পাখির পরিযায়ন বা মাইগ্রেশন(MIGRATION OF BIRDS)


 MIGRATION OF BIRDS:A Mysterious Nature Of Birds

মাইগ্রেশন এইরকমই....☺

“পাখির পরিযান বলতে নির্দিষ্ট প্রজাতির কিছু পাখির প্রতি বছর বা কয়েক বছর পর পর একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে বা সময়ে কম করে দু’টি অঞ্চলের মধ্যে আসা-যাওয়াকেই বোঝায়। জীবজন্তুর ক্ষেত্রে মাইগ্রেশন (Migration) এর সঠিক অর্থ হচ্ছে সাংবাৎসরিক পরিযান যে সব প্রজাতির পাখি পরিযানে অংশ নেয়, তাদেরকে পরিযায়ী পাখি বলে। এ পাখিরা প্রায় প্রতিবছর পৃথিবীর কোন এক বা একাধিক দেশ বা অঞ্চল থেকে বিশ্বের অন্য কোন অঞ্চলে চলে যায় কোন একটি বিশেষ ঋতুতে। সে ঋতু শেষে সেগুলো আবার ফিরে যায় যেখান থেকে এসেছিল সেখানে। এমন আসা যাওয়া কখনো এক বছরে সীমিত থাকে না। এ ঘটনা ঘটতে থাকে প্রতি বছর এবং কমবেশি একই সময়ে”(Wikipedia)
প্রত্যেক প্রাণীর জন্যই পরিবেশে কিছু না কিছু প্রতিকূল বিষয় থাকে। এসব বিষয় অনেক সময় ঋতুভিত্তিক দেখা দেয়। ঋতুগতভাবে পরিবর্তনশীল পরিবেশ মোকাবিলায় প্রাণী যে সব কার্যকর পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে তারই একটি হচ্ছে মাইগ্রেশন বা পরিযান।প্রাণী তখন অনুকূল পরিবেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এরকম যাতায়াত সাধারণত একই পথ অনুসরণ করে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে সংঘটিত হয়। পাখির জগতে পরিযান ব্যাপক বিস্তৃত। প্যালিআর্কটিক অঞ্চলেরর ৪০ শতাংশ পাখি-প্রজাতি পরিযায়ী। পাখিদের পরিযান বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যাবৃত ঘটনা, তবে যে কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ উল্লিখিত হয়েছে তা হচ্ছে - খাদ্যের স্বল্পতা, শীতের তীব্রতা, পূর্বপুরুষীয় বাসভূমিতে প্রত্যাবর্তন ইত্যাদি।

পাখি পরিযানের অন্যতম দু’টি কারণ হচ্ছে খাদ্যের সহজলভ্যতা আর বংশবৃদ্ধি। উত্তর গোলারঅধিকাংশ পরিযায়ী পাখি বসন্তকালে উত্তরে আসে অত্যধীক পোকামাকড় আর নতুন জন্ম নেয়া উদ্ভিদ ও উদ্ভিদাংশ খাওয়ার লোভে। এসময় খাদ্যের প্রাচুর্যের কারণে এরা বাসা করে বংশবৃদ্ধি ঘটায়। শীতকালে বা অন্য যে কোন সময়ে খাবারের অভাব দেখা দিলে এরা দক্ষিণে রওনা হয়।
আবহাওয়াকে পাখি পরিযানের অন্য আরেকটি কারণ হিসেবে ধরা হয়। শীতের প্রকোপে অনেক পাখিই পরিযায়ী হয়। হামিংবার্ডও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে খাবারের প্রাচুর্য থাকলে প্রচণ্ড শীতেও এরা বাসস্থান ছেড়ে নড়ে না।

স্থানীয় পরিযান সাধারণত কয়েকশ ফুট থেকে ১-২ মাইল পর্যন্ত হয়, যেমন - হিমালয়ান প্রার্ট্রিজ (একধরণের তিতির)। অন্যদিকে আর্কটিক টার্ণ ১১ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে শীতকালে অ্যান্টার্কটিকার উপকূলে এসে হাজির হয়।কিছু পাখি মাটির সামান্য উপর দিয়ে উড়ে গেলেও সুশৃঙ্খল পরিযানের অংশগ্রহণকারী পাখি মাটি থেকে প্রায় ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় আন্দিজ ও হিমালয় পর্বতকেও অতিক্রম করে যায়। পাখিরা সাধারণত এক দিনে ৫-৬ ঘন্টা উড়বার পর খাদ্য ও পানীয়ের জন্য বিশ্রাম নেয়, কিন্তু 'গোল্ডেন প্লোভার' পাখির বিরতিহীনভাবে উড়ে ১৪০০ মাইল দূরবর্তী দক্ষিণ আমেরিকায় পৌঁছার প্রমাণ আছে।

পরিযানের সময় পাখিরা সুশৃঙ্খল রীতি মেনে চলে। প্রথমে বয়স্ক পাখিরা পরিযায়ী হতে শুরু করে, পরে স্ত্রী ও তরুণরা অনুসরণ করে। ফিরতি অভিযানে তরুণরাই নেতৃত্ব দেয়। পরিযানের নিয়ম ও সময় সবসময় ঠিক থাকে। অস্বাভাবিক আবাহাওয়ায় কিছুটা ব্যতিক্রম না ঘটলে কিছু প্রজাতির পরিযান-সময় ও শীতভূমি পরিত্যাগ-সময় বছরের পর বছর একই থাকে, দুএকদিন এদিক-ওদিক হতে পারে। তাছাড়া, পাখিরা সবসময় একই পথ ধরে পরিযায়ী হয় এবং ঠিক আগের জায়গায় গিয়ে পৌঁছে।

পরিযায়ী পাখিরা নিজস্ব গমনপথ ধরে এগিয়ে চলে। এ পথ অধিকাংশ সময় একই থাকে। পাখির বিভিন্ন গমনপথের মধ্যে রয়েছে সমুদ্র, উপকূলীয় নদী ও নদী-বিধৌত ভুখন্ডঙ ও পর্বত্য পথ। সমুদ্র পথ সাধারণত সামুদ্রিক পাখিরা ব্যবহার করে। বিশেষ করে জলচর পাখিরা উপকূলীয় পথ ধরে পরিযায়ী হয়। সমতল থেকে পাহাড়ে এবং পাহাড় থেকে সমতলে গমনাগমনেরর সময় পরিযায়ী পাখি নদী ও নদী-বিধৌত ভূখণ্ডকে গমনপথ হিসেবে বেছে নেয়। খুব কম পাখিই পর্বত অতিক্রম করে। পর্বতগুলো পরিযায়ী পাখিদের নির্দেশক চিহ্ন হিসেবে কাজ করে। তবে কিছু জলচর পাখিকে হিমালয় পর্বত অতিক্রম করতেও দেখা যায়। ঐ পাখিদের জন্য তা একটি গমন পথ।
পাখিদের মাইগ্রেশন এর পথ!


বিস্তারিত জানতে ভিজিট করো...

★https://www.allaboutbirds.org/the-basics-how-why-and-where-of-bird-migration/ জানতে ভিজিট করো........
★https://bn.m.wikipedia.org/wiki/পাখি_পরিযান