Showing posts with label বাংলা পোস্ট. Show all posts
Showing posts with label বাংলা পোস্ট. Show all posts

Saturday, February 8, 2020

সকাল ও সন্ধ্যার আমল-৩০ মিনিটে নিশ্চিত করুন দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা!

সকাল ও সন্ধ্যার আমল

দোয়া ১ (৭ বার)

উচ্চারণঃ হাসবিয়াল্লা-হু লা-ইলাহা ইল্লা-হু আ’লাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম। (যাদুল মাআদ)
অর্থঃ আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তারই উপর নির্ভর করছি, আর তিনি হচ্ছেন মহান আরশের অধিপতি।
ফজিলতঃ যে ব্যক্তি সকাল এবং সন্ধ্যায় এ দুআ’টি ৭ বার পড়বে, দুনিয়া ও আখিরাতের সব চিন্তা-ভাবনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হবেন।

দোয়া ২ (৩ বার)

উচ্চারণঃ বিছমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআ’ছমিহি শাইয়্যুন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস্সামাই ওয়া হুয়াচ্ছামীয়ুল আলিম।(তিরমিযী, যাদুল মাআদ)অর্থঃ আল্লাহর নামে (আমি এই দিন বা রাত শুরু করছি)- যার নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কেউ কোন ক্ষতি করতে সক্ষম নয়। তিনি সব শুনেন ও জানেন।
ফজিলতঃ যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় এ দুআ’ ৩ বার করে পাঠ করেন, আল্লাহ তাআলা তাকে সর্বপ্রকার ক্ষতি থেকেই হিফাজত করা হয়।

দোয়া ৩ (৪ বার)

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আছবাহ্তু/আমছাইতু আশহাদুকা, আশহাদু জুমলাতা আরশিকা ওয়া মালাইকাতিকা, ওয়া জামীআ খালক্বিকা, ইন্নাকা আনতাল্লাহুল্লাযী লা ইলাহা ইল্লা আন্তা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া রাসুলুক।

অর্থঃ হে আল্লাহ্ আমি সকাল করছি আপনাকে সাক্ষ্য রেখে, আরশবাহী ফিরিশতাদের সাক্ষ্য রেখে, সমস্ত সৃষ্টি জগতকে সাক্ষ্য রেখে – নিশ্চয়ই আপনিই সেই সত্বা যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার বান্দা ও রাসুল।

ফজিলতঃ যে ব্যক্তি এ দু’আ ৪ বার উল্লেখিত নিয়মে পড়বে, ১ বার পড়ার পর তার দেহের এক চতুর্থাংশ জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে দ্বিতীয় বার পাঠের পর অর্ধাংশ, তৃতীয়বার পাঠের পর তিন চতুর্থাংশ ও চতুর্থবার পাঠের পর সম্পূর্ণ অংশ জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। (যাদুল মাআদ)

দোয়া ৪  (৩ বার)

উচ্চারণঃ রাদ্বি-তু বিল্লা-হি রাব্বাও ওয়া বিল ইসলামি দ্বিনাও ওয়া বি মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলািইহি ওয়া সাল্লাম নাবিইয়্যাও ওয়া রাসূলা। (তিরমিজি)।
অর্থঃ আমি সন্তুষ্ট আছি আল্লাহ্কে প্রতিপালক হিসাবে, ইসলামকে দ্বীন হিসাবে ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লামকে নবী হিসাবে পেয়ে।
ফজিলতঃ যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় (অর্থাৎ ফজর ও মাগরিবের পর) এ দোয়াটি ৩ বার করে পাঠ করবে তার উপর সন্তুষ্ট হওয়া আল্লাহর উপর দায়ীত্ব হয়ে যায়। (তিরমিজি)

দোয়া ৫ (১ বার)

সায়্যিদুল ইস্তিগফার

উচ্চারণ :আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি,ওয়া আনা আবদুকা,ওয়া আনা আলা আহদিকা,ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাতা’তু।আউজু বিকা মিন শাররি মা-সানা’তু। আবুয়ু লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা। ওয়া আবুয়ু লাকা বি জাম্বি। ফাগফিরলী ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনবা ইল্লা আনতা।

অর্থ : হে আল্লাহ! একমাত্র আপনিই আমাদের প্রতিপালক। আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আপনিই আমার স্রষ্টা এবং আমি আপনার দাস। আমি আপনার সঙ্গে কৃত ওয়াদা ও অঙ্গীকারের ওপর সাধ্যানুযায়ী অটল ও অবিচল আছি। আমি আমার কৃতকর্মের সব অনিষ্ট হতে আপানার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমার উওর আপনার দানকৃত সব নেয়ামত স্বীকার করছি। আমি আমার সব গুনাহ স্বীকার করছি। অতএব, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। কেননা, আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।

ফজিলতঃ নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সকালে সায়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে, সে যদি সন্ধ্যা হওয়ার আগে মারা যায় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি সুদৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সন্ধ্যায় সায়্যিদুল ইস্তিগফার পড়ে সে যদি সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। -সহিহ বোখারি: ৬৩০৬

দোয়া ৬ (৭ বার)

জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া!
“আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান্ নার।”
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করুন।
ফজিলত: যদি কেউ মাগরিবের নামাজ শেষ করে সাতবার এই দোয়াটি পাঠ করে এবং ঐ রাতেই তার মৃত্যু হয় তবে সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। এমনিভাবে যদি ফজরের পর পাঠ করে এবং ঐ দিন তার মৃত্যু হয় তাহলে সে জাহান্নামে থেকে মুক্তি পাবে।

দোয়া ৭ (১ বার)

আয়াতুল কুরসী

অনুবাদ:- আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয়। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর। কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সামনে ও পিছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন। আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না। তাঁর ‘কুরসী’ আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে; আর এ দুটোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান।”

ফযিলতঃ সূরা আল-বাকারাহ্, ২৫৫। যে ব্যক্তি সকালে তা পড়বে সে বিকাল হওয়া পর্যন্ত জিন্ন শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে, আর যে ব্যক্তি বিকালে তা পড়বে সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জিন শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে। হাদীসটি হাকিম সংকলন করেছেন, ১/৫৬২। আর শাইখ আলবানী একে সহীহুত তারগীব ওয়াত-তারহীবে সহীহ বলেছেন ১/২৭৩। আর তিনি একে নাসাঈ, তাবারানীর দিকে সম্পর্কযুক্ত করেছেন এবং বলেছেন, তাবারানীর সনদ ‘জাইয়্যেদ’ বা ভালো।

দোয়া ৮ (৩ বার)

সূরা ইখলাস, সূরা আল-ফালাক ও সূরা আন-নাস
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْم
অনুবাদঃ রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। “বলুন, তিনি আল্লাহ্, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ্ হচ্ছেন ‘সামাদ’ (তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী)। তিনি কাউকেও জন্ম দেন নি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয় নি। আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।”
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْم
রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। “বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি  ঊষার রবের। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে। ‘আর অনিষ্ট হতে রাতের অন্ধকারের, যখন তা গভীর হয়। আর অনিষ্ট হতে সমস্ত নারীদের, যারা গিরায় ফুঁক দেয়। আর অনিষ্ট হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।”
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْم
রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। “বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের ইলাহের কাছে, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হতে; যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে।”
ফযিলতঃ হাদীসে এসেছে, রাসূল বললেন, যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে ‘সূরা ইখলাস’, ‘সূরা ফালাক’ ও ‘সূরা নাস’ তিনবার করে পড়বে, এটাই আপনার সবকিছুর জন্য যথেষ্ট হবে।

দোয়া ৯ (১ বার)

দুনিয়া ও আখিরাতের প্রশান্তির জন্য দোয়া

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল- ‘আ-ফিয়াতা ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আ-খিরাতি। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল ‘আফওয়া ওয়াল-‘আ-ফিয়াতা ফী দ্বীনী ওয়াদুনইয়াইয়া, ওয়া আহ্লী ওয়া মা-লী, আল্লা-হুম্মাসতুর ‘আওরা-তী ওয়া আ-মিন রাও‘আ-তি। আল্লা-হুম্মাহফাযনী মিম্বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খালফী ওয়া ‘আন ইয়ামীনী ওয়া শিমা-লী ওয়া মিন ফাওকী। ওয়া আ‘ঊযু বি‘আযামাতিকা আন উগতা-লা মিন তাহ্তী।

অনুবাদ:“হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট ক্ষমা এবং নিরাপত্তা চাচ্ছি আমার দ্বীন, দুনিয়া, পরিবার ও অর্থ-সম্পদের। হে আল্লাহ! আপনি আমার গোপন ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখুন, আমার উদ্বিগ্নতাকে রূপান্তরিত করুন নিরাপত্তায়। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হেফাযত করুন আমার সামনের দিক থেকে, আমার পিছনের দিক থেকে, আমার ডান দিক থেকে, আমার বাম দিক থেকে এবং আমার উপরের দিক থেকে। আর আপনার মহত্ত্বের অসিলায় আশ্রয় চাই আমার নীচ থেকে হঠাৎ আক্রান্ত হওয়া থেকে”।

দোয়া ১০ (৩ বার)

বিষধর প্রাণী থেকে  নিরাপত্তার জন্য দোয়া
উচ্চারণঃ আ‘ঊযু বি কালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খালাক্ব।
অর্থঃআল্লাহ্র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় আমি তাঁর নিকট তাঁর সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।
ফযিলতঃ যে ব্যক্তি বিকাল বেলা এই দোয়াটি ৩ বার পড়বে, সে রাতে কোন বিষধর প্রানী তার ক্ষতি করতে পারবে না।

দোয়া ১১ (১০০ বার)

প্রত্যেক ফরজ সলাত শেষে
➡ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ
➡ ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্
➡ ৩৩ বার আল্লাহু আকবার এবং
➡ ১ বার (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু,লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর)
ফজিলতঃআপনার অতীতের সব পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে।সেই সাথে জাহান্নাম থেকেও মুক্তি পেয়ে যাবেন কেননা দিনে ৩৬০ বার এই তাসবিহগুলো পড়লেই জাহান্নাম থেকে মুক্ত রাখা হয় আর এভাবে ৫ ওয়াক্তে ৫০০ বার পড়া হচ্ছে।(মুসলিম, মিশকাত-১৮০৩)

দোয়া ১২ (১০ বার)

দরুদ
ফজিলতঃ রাসুল (সাঃ)-এর উপর সকালে ১০ বার ও সন্ধ্যায় ১০ বার দরুদ পড়ুন(আল্লাহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিয়া’না মুহাম্মাদ) এতে আপনি নিশ্চিত রাসুল (সাঃ)-এর সুপারিশ পাবেন।
(তবরানি, সহিহ তারগিব-৬৫৬)

দোয়া ১৩ (১০০ বার)

"সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি" পাঠ করা । (১০০ বার) -[সহীহ মুসলিম]
ফজিলতঃ
যে ব্যক্তি সকালে ১০০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০০ বার এই তাসবীহ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার চাইতে উত্তম আমল নিয়ে আর কেউ আসতে পারবে না । তবে, ঐ ব্যক্তি ব্যতীত, যিনি অনুরূপ তাসবীহ পাঠ করেছে অথবা তার চাইতে বেশি আমল করেছে ।

দোয়া ১৪ (১ বার)

সকালে, সন্ধ্যায় এবং বিছানা শোয়ার পর ১ বার
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ্শাহা-দাতি, ফা-ত্বিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, রাব্বা কুল্লি শাই’ইন ওয়া মালীকাহু, আশহাদু আন লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা, আ‘উযু বিকা মিন শাররি নাফ্সী ওয়া মিন শাররিশ শাইত্বা-নি ওয়া শিরকিহী।
অর্থ: হে আল্লাহ! হে গায়েব ও উপস্থিতের জ্ঞানধারী! হে আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা! হে সব কিছুর রব্ব ও মালিক! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আমার আত্মার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের অনিষ্ট থেকে ও তার শির্ক বা ফাঁদ থেকে)।
ফজিলতঃরাসূল সাঃ বলেন,"তুমি এ দোয়াটি পড়বে সকালে, সন্ধ্যায় এবং বিছানা শোয়ার পর"

দোয়া ১৫ (১ বার করে প্রতিদিন)-নিজস্ব আমল
  • ৩৩ আয়াত
  • আহাদ নামা,ইসমে আজম,আয়াতে শিফা
  • আসমাউল হুসনা
  • সাত সালাম
  • পাঁচ কালিমা
  • কোরআনঃসূরা মুযযাম্মিল,সূরা জুমুয়াহ্,সূরা ইয়াসিন
  • যিকিরঃলা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ১০০,আস্তাগফিরুল্লাহ ৩৩,রাব্বিগফিরলি ৩৩,বিসমিল্লাহ ১৯,আল্লাহু আল্লাহ ১০০ বার।
  • নামাজঃইশরাক,চাশত,আওয়াবীন,তাহাজ্জুদ,তাহিয়াতুল ওযু


Sunday, July 28, 2019

নিকোলাস কোপার্নিকাস-আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার জনক


আমার প্রিয় বিজ্ঞানী-নিকোলাস কোপার্নিকাস


আমার প্রিয় বিজ্ঞানী আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার জনক নিকোলাস কোপার্নিকাস,আইন্সটাইন যাকে বলেছেন "আধুনিক বৈজ্ঞানিক যুগের পথিকৃৎ" কারণ তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই সম্ভব হয়েছে কেপলার,গ্যালিলিও,নিউটনের যুগান্তকারী আবিষ্কারসমূহ যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের মধ্যযুগীয় ভ্রান্ত ধারণা মুছে দিয়ে জ্ঞানবিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটায় যা Copernican Revolution নামে বিজ্ঞানের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়।
কোপার্নিকান এর অবদানেই আমরা পেয়ে যায় আমাদের সৌরজগতের আসল পরিচয় Heliocentric Model,পৃথিবীর ও অন্যান্য গ্রহ-উপগেহের গতিপথের ধরন,পৃথিবী থেকে অন্যান্য গ্রহসমূহের দূরত্ব,পৃথিবীর অক্ষীয় ঘূর্ণন ইত্যাদি।


Heliocentric(সৌরকেন্দ্রীক) vs Geocentric(ভূকেন্দ্রীক)
তিনিই এই সত্য বের করতে পেরেছিলেন যে,পৃথিবী নয় বরং সূর্যই কেন্দ্রে এবং অন্যান্য সব গ্রহ একে কেন্দ্র করে ঘুরে।এই সত্য তিনি প্রথম তার বই "Commentariolus" এ ১৫১৪ সালে প্রকাশ করেন।কোপার্নিকাস এর আগে  যদিও আরিস্টাকাস 'সৌরমডেল' এর ধারণা দিয়েছিলেন তবে তার চেয়ে কোপার্নিকাস এর হিসেবনিকেশ সুক্ষ্ম ও নির্ভুল ছিলো।অনেক উপহাসের স্বীকার এবং হুমকির স্বীকার হয়ে তিনি তার যুগান্তকারী দ্বিতীয় বইটি "De revolutionibus orbium coelestium" প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছিলেন কারণ সৌরকেন্দ্রিক মডেল বাইবেল বিরোধী!১৫৪৩ সালে জানের ভয় নিয়ে এক প্রকাশক বইটি প্রকাশ করেন উপরে এটা লিখে দিয়ে,
"বইটি সম্পূর্ণ সত্য নয় কেবল ব্যক্তিগত অনুমানের উপর লিখিত।"
অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হয়েছিল কারণ এ সময় বাইবেলের বিরুদ্ধে যাওয়া মানে নিশ্চিত মৃত্যু।পরে অবশ্য মানুষ তার বইয়ের আসল পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাই।বইটি ছাপা হয়ে যখন তার হাতে আসে তখন তিনি মৃত্যুশয্যায়,পড়তে পারেননি কিছুক্ষণ নড়াচড়া করেই এর কয়েক ঘণ্টা পর মারা যান ৭০ বছর বয়সের এই মহান বিজ্ঞানী!


তার লেখা ৪০ পৃষ্ঠার অপর একটি বই "Sketch of Hypothesis" কে তার প্রদত্ত মহাবিশ্বের মডেলের সারকথা হিসেবে উল্লেখ করা হয়,এটাও ১৫১৪ সালে প্রকাশিত হয়।তবে তার মৃত্যুর পর পর প্রায় ৩০০ বছরের জন্য রোমান শাসক তার বইকে নিষিদ্ধ করে রেখেছিলো।
কোপারনিকাস এর আবিষ্কার তথা পর্যবেক্ষণ মহাবিশ্বের প্রতি আমাদের ধারণা পালটে দেয়।তবে তার একটি ধারণা ভুল ছিলো সেটা হলো, গ্রহ-উপগ্রহ সমূহ সম্পূর্ণ বৃত্তীয় পথে আবর্তন করে যদিও কেপলার পরবর্তীতে এটি শুধরে দেন যে,বৃত্তীয় নয় বরং উপবৃত্তাকার কক্ষপথেই জ্যোতিষ্কসমূহের আবর্তন সম্পন্ন হয়।
তবে তার প্রদত্ত Cosmological Principal বিজ্ঞানের এক অনন্য প্রাপ্তি যেটি 'Genuine Copernican Cosmological Principle' নামে পরিচিত;যেখানে বলা হয়েছে-"যেকোন গ্রহ থেকেই দেখা হোক না কেন মহাবিশ্বকে সবদিকথেকে মোটামুটি একই দেখাবে যেটিকে আরেকটু বুঝিয়ে বললে দ্বারাই মহাবিশ্ব দিকনিরপেক্ষ বা সবদিক থেকে একই।"

অর্থনীতিতে কোপার্নিকাসের অবদান এড়িয়ে যাওয়ার মতো নয়।যথাক্রমে ১৫১৭ ও ১৫১৯ সালে তিনি অর্থনীতির একটি মূল ধারণা "Quantity Theory Of Money" এবং "Gresham’s Law" এর ধারণা দেন।

বিচিত্র বিষয়ে তার পাণ্ডিত্য ছিলো।তিনি অধ্যয়ন করেছেন মূলত ধর্মশাস্ত্র,গণিতশাস্ত্র,জ্যোতির্বিদ্যা এবং চিকিৎসাশাস্ত্র।তিনি চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং কিছুদিন অধ্যাপনাও করেছেন কিন্তু তৎকালীন ভূকেন্দ্রীক মডেল তার ভুল মনে হচ্ছিলো তাই শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে নিজ গ্রামে এসে নিরলস পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার পর তা লিপিবদ্ধ করেন যা এক নতুন যুগ সৃষ্টি করে।


'কোপার্নিক' শব্দের অর্থ বিনয়ী,তিনি সত্তিই খুব বিনয়ী ছিলেন।জ্যোতির্বিদ ছাড়াও তিনি ছিলেন দক্ষগণিতজ্ঞ,শিক্ষক,সরকারের উপদেষ্টা,অর্থনীতিবিদ,চিকিৎসক এবং সমাজকর্মী।তার জন্ম ও মৃত্যু পোল্যান্ড যথাক্রমে ১৪৭৩ ও ১৫৪৩ সালে।অবিবাহিত এই মহান বিজ্ঞানীর  কোন স্ত্রী পুত্র ছিলো না।
তার একটি বিখ্যাত উক্তি হলো-
"To know that we know what we know, and to know that we do not know what we do not know,that is true knowledge."
(Nicolaus Copernicus)

Saturday, July 27, 2019

অল্প কথা,অল্প আহার,অল্প ঘুম

অল্প কথা,অল্প আহার,অল্প ঘুম


মাঈন উদ্দিন



জীবনের মূল তিন চালিকাশক্তি হল আহার,নিদ্রা ও কথা।একটু ভাবলেই বুঝবেন,খাদ্য ছাড়া মরণ সুনিশ্চিত,ঘুম ছাড়াও বেঁচে থাকা সম্ভব নয় আর যোগাযোগের মাধ্যম হলো কথা এবং এটা ছাড়াও বেঁচে থাকা বেশ দূরহ।
ঘুমের মধ্যে আমরা জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করি আর এই সময়টুকু কমিয়ে যারা ইহলৌকিক ও পরলৌকিক কল্যাণে কাজে লাগাতে পারে তারাই সফল হয়।খাদ্য আমাদের বেঁচে থাকার জৈবিক শক্তি যোগায় অন্যদিকে মাত্রাতিরিক্ত,মানহীন,দুষিত ও বিষাক্ত খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরুপ।অযথা অর্থহীন কথা বলে নিজের সীমিত সময়ের অপচয় করা বেশ খারাপ অভ্যাস এবং এর মাধ্যমেই কিন্তু 'আকবারুল কাবায়ের' বা সর্ববৃহৎ পাপসমূহ সংগঠিত হয়।তাই চলুন দেখে নিই কীভাবে অল্প কথা,অল্প ঘুম এবং অল্প আহারের মাধ্যমে জীবন গড়ে তোলা যায়-

অল্প কথাঃ

একদা রাসূল (সাঃ) তাওহীদ,নামাজ,রোজা,হজ্জ,সদকা,তাহাজ্জুদ ও জিহাদের আলোচনা করে সাহাবিদের বললেন;যদি তোমরা চাও তাহলে এসবের মূল কী তা বলে দিতে পারি-
সাহাবী মুআয (রাঃ) বললেন,হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ),আপনি বলে দিন।
রাসূল (সাঃ) তার জিহ্বাকে ধরে বললেন,"এটাকে সংযত রাখ"
এর মাধ্যমে বুঝা যায় নিজের জবানকে সংযত রাখার গুরুত্ব কতটুকো কারণ নীরবতা তথা অল্প কথার মাধ্যমে জবানকে সংযত রাখার ফলে নিজ এবং অন্যকেও অনেক বড় বড় পাপ থেকে বিরত রাখা যায় ফলে মানুষের ইমান,আমল,আখলাক সবই পরিশুদ্ধ হয়ে যায়।
একটু ভাবলেই বুঝবেন,আমরা প্রতিনিয়ত কেবল অবান্তর কথাবার্তা,গল্পগুজব,ঠাট্টা-তামাশা,দ্বন্দ্ব-কলহ,তর্ক,গালি,অশ্লীলতা,আত্মগরিমা,তোষামোদির মাধ্যমেই মিথ্যা,গীবত,কুফরীর মত বড় বড় পাপে লিপ্ত হয়ে যায় অথচ কেবল এই জবানকে সংযত রাখার মাধ্যমেই এতোসব পাপ থেকে দূরে থাকা যায়।
আমাদের ভুলে যাওয়া উচিৎ নয়,পরকালে প্রত্যেকটি কথার হিসাব দিতে হবে তাই অযথা বাক-বিনিময় না করে নীরবতায় বেশি সময় কাটানো উচিৎ কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নীরবতাই শয়তানকে দূরে সরিয়ে দেয় ফলশ্রুতিতে পাপে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।রাসূল (সাঃ) বলেছেন,"চুপ থাকলে মানুষ ষাট বছরের ইবাদত করার সওয়াব প্রাপ্ত হয়।"

অল্প আহারঃ

'অতি ভোজনে মরণ' কথাটি একেবারে সত্য।অস্বাস্থ্যকর খাবার পেটপুরে খাওয়া আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাস।মাছে ভাতে বাঙ্গালীর ফাঁদ কাটিয়ে না উঠতে পারলে অতি আহারের দরুণ সবচেয়ে মারাত্মক যে সমস্যা তা হলো নিদ্রা বেড়ে যাওয়া।এমন তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় ঘুম ছাড়া কিছুই সূচারুরুপে হয়না।
যত বেশি পরিমাণে সজীব কোষ খাওয়া যায় তা আমাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম তাই উপযুক্ত খাদ্য তালিকা তৈরি করে Food Pyramid অনুসারে এবং নিজের স্বাস্থ্য বিবেচনায় আহার করা উচিৎ।
সবসময় বিশুদ্ধ,হালাল,পুষ্টিকর খাবার খেলে নিজের দেহ ও মন কখনোই নিস্তেজ হয়না কারণ একমাত্র সজীব খাদ্যই জীবনকে সজীব রাখে।
হালাল খাদ্য হালাল দেহের সাথে হালাল মন তৈরি করে দেয় আর এমন বান্দার ইবাদত স্রষ্টার কাছে কখনোই অগ্রাহ্য হয়না।তাই সকলের উচিৎ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিশুদ্ধ খাবার খাওয়া এবং অতি ভোজন পরিহার করে শরীরের জৈবনিক বিশ্রামে সাহায্য করা তাহলে শরীরে ক্লান্তি ভর করবেনা এবং কোন কাজে ঘুম ব্যাঘাত ঘটাবে না তা হোক গভীর রাতের তাহাজ্জুদ অথবা নিতান্ত ব্যক্তিগত কোন কাজ।

অল্প ঘুমঃ

মানুষ জীবনের ১/৩ সময় ঘুমিয়ে কাটায় আর যারা এই সময়টাকে কমিয়ে আনতে পারে তারাই দ্রুত সফলকাম হয়।অতি নিদ্রা অলসতা ছাড়া আর কিছুই নয় তাই এ অভ্যাস পরিহার করে নিজের জীবন ও সময়ের প্রতি যত্নবান হোন।একবার আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তার এক সাহাবীকে বললেন-
"রাতে খুব বেশি ঘুমাবেনা কারণ বেশি ঘুমানো ব্যক্তি কিয়ামতের দিন খালি হাতে হাজির হবে।"
অন্য এক হাদীসে নবী কারীম (সাঃ) বলেন-
"আল্লাহ পাক তিনটি আওয়াজ খুব পছন্দ করেন;মোরগের ডাক,কোরআন তিলওয়াতকারীর আওয়াজ এবং রাতের শেষাংশে প্রভুর দরবারে বান্দার মিনতির আওয়াজ।"
8 ঘণ্টার চেয়ে কম এবং ৮ ঘণ্টার চেয়ে বেশি ঘুমানো লোকদের মৃত্যু দ্রুত হয় তাই সবার উচিত Sleep Hour এর মাঝামাঝি রাখা।
আমাদের অধিকাংশ মানুষই Biphasic বা দুই ধাপে ঘুমাই,একটা রাত্রীকালীন দীর্ঘ ঘুম আর অন্যটি দুপুরের স্বল্পকালীন ঘুম।খাদ্যাভ্যাসের উপর ঘুমের মান নির্ভর করে তাই পরিমিত বিশুদ্ধ খাবার খেলে শরীরে কম বিশ্রামের প্রয়োজন হয় তখন ঘুমের পরিমাণ ৮ ঘণ্টা থেকে ৪,৫ বা ৬ ঘণ্টায় কমিয়ে আনা যায় এবং এই সময় নিজের কল্যাণে ব্যয় করা যায়।
অতএব অল্প কথায় গভীর থেকে,অল্পাহারে তুষ্ট থেকে এবং অল্প নিদ্রায় সুস্থ থেকে জীবনকে মার্জিত,অর্থবহ,সজীব ও সুন্দর রাখতে সচেষ্ট হোন এবং অল্পের জীবনে বেশি বেশি সালাত আদায়,সাওম পালন,সদকা দেওয়া,জ্ঞানে-গুণে মজ্জাগত হওয়া,সততা ও বিনয়ে উচ্চ হওয়ার মধ্যমে জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলুন।

রাসূল (সাঃ) এর ২৪ ঘণ্টা থেকে আমাদের শিক্ষা


রাসূল (সাঃ) এর ২৪ ঘণ্টা থেকে আমাদের শিক্ষা


প্রায় সবাই জানি,মানুষ পরমাণু দিয়েই গঠিত কিন্তু মানুষের ভিতর যে 'মানস' থাকে তা কী দিয়ে তৈরি?

এর একক কী বলতে পারেন?

মানস,মন বা আত্মা যাই বলুন এর একক কেবল উত্তম চরিত্র যা গড়ে ওঠে প্রকৃষ্ট কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে যাদের বলা হয় Atomic Habits।চরিত্র গুণেই মানুষ গুণান্বিত হয়।কেবল উত্তম আদর্শ তথা চরিত্রই মানুষকে সরেস,সুন্দর এবং শ্রেষ্ঠ করে তুলে।




অন্যের জীবনী পড়লে একটি জীবনকে জানা যায় আর সে জীবন থেকে প্রাপ্ত সকল শিক্ষাকে আপনি নিজ জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন।তাহলে আপনি কার জীবনী পড়ে নিজ জীবনে প্রয়োগ করবেন?

নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী কাউকেই।মাইকেল এইস হার্ট এর 'The Hundred' বইতে সেরা ১০০ মনীষীর তালিকায় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কেই সর্বপ্রথমে রেখেছেন।তাছাড়া পবিত্র কোরআনে সূরা আহযাবে আল্লাহ বলেন-
لَقَدْ كَا نَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللّٰهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَا نَ يَرْجُوا اللّٰهَ وَا لْيَوْمَ الْاٰخِرَ وَذَكَرَ اللّٰهَ كَثِيْرًا ۗ 

"তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।"

(৩৩:২১)



এবার নিশ্চয় আপনার জানতে ইচ্ছে হচ্ছে কীভাবে   মুহাম্মদ (সাঃ) তার নিত্যদিনের ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত করতেন যা তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বানালো?

এটাই আলোচ্য বিষয়,চলুন শুরু করি,

রাসূল সাঃ এর নিত্যদিনের সকল কর্মকাণ্ডকে মূলত তিনভাগে ভাগ করা যায়-

▪ আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয়

▪ সামাজিক এবং 

▪ ব্যাক্তিগত

আমাদের ক্ষেত্রে যা হয়,আমরা জীবনের যাত্রার সাথে ধর্মের মাত্রা এক রাখতে পারিনা,গুলিয়ে ফেলি বা ব্যর্থ হই কিন্তু রাসূল (সাঃ) এমনভাবে নিজের জীবন,সময় ও পারিপার্শ্বিক কাজকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আবর্তে বেধেছিলেন যা তার সাফল্যের অন্যতম সূত্র কারণ আধ্যাত্মিকতাই একমাত্র জিনিস যা আপনাকে এককভাবে শান্তিপূর্ণ জীবন দিতে পারে,ধর্মের বিমল শক্তি কোনভাবেই অস্বীকার করার নয়!

সাতটি ধাপে আমরা রাসূল (সাঃ) এর ২৪ ঘণ্টার নাতিদীর্ঘ আলোচনা করবো এবং নিজ জীবনে প্রয়োগের জন্য কিছু পরামর্শ দিবো।




ফজর থেকে সূর্যোদয়

তাহাজ্জুদ শেষ করে রাসূল (সাঃ) শেষরাতেই ঘুমাতেন অতঃপর বিলালের আজানের ডাকে সাথে সাথেই উঠতেন,মিসওয়াক করতেন,দোয়া পড়তেন এবং ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকতেন।তারপর ইকামত দিলে সাহাবিদের নিয়ে ফজরের ফরয নামাজ আদায় করতেন,ধর্মীয় আলোচনা করতেন এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদেই অবস্থান করতেন।

সূর্যোদয়ের পর থেকে যোহর

দুই রাকাত ইশরাকের নামাজ পড়ে রাসূল (সাঃ) ঘরে ফিরে আসতেন।মিসওয়াক করে পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিতেন,বাক্যালাপ করতেন।অধিকাংশ সময় রোজা রাখতেন,না রাখলে প্রাতরাশ হিসেবে খেজুর,উটের দুধ,রুটি এসব খেতেন।তিনিই যেহেতু মুসলমানদের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন,অনেক দায়িত্বভার নিয়ে তিনি সকল সামাজিক,রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান দিতেন,সাহাবিদের সাথে মসজিদে আলোচনা করতেন,কুশলাদি বিনিময় করতেন।এরপর মধ্যাহ্নভোজ শেষে যোহরের আগ পর্যন্ত একটু ঘুমিয়ে নিতেন নিতেন।

যোহর থেকে আসর

বিলালের আজানে রাসূল (সাঃ) জেগে উঠতেন তারপর অজু করে সুন্নাত আদায় এবং তারপর মসজিদে গিয়ে ফরজ আদায় করতেন।এরপর তিনি সবাইকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন এবং সাহাবিদের নিয়ে দরকারী কাজ সেরে নিতেন,মাঝেমাঝে বাইরে যেতেন তা-নাহলে আসর পর্যন্ত মসজিদেই অবস্থান করতেন।

আসর থেকে মাগরিব

এই সংক্ষিপ্ত সময়ে রাসূল (সাঃ) আসরের নামাজ আদায় করতেন অতঃপর মুসল্লীদের সাথে হালকা কথাবার্তা শেষে তিনি এই সময়টা নিতান্ত পারিবারিক রাখতেন,স্ত্রীদের সাথে দেখা করতেন এবং রাত্রীযাপন করতেন,তাদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন এবং দীন চর্চায় আগ্রহ জাগাতেন।

মাগরিব থেকে এশা

মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ শেষ করে রাসূল (সাঃ) ঘরে ফিরে এসে স্ত্রী'র সাথে,কখনোও বা সাহাবিদের  সাথে সান্ধ্যভোজন বা সেরে নিতেন।ভোজ শেষে কিছুক্ষণ বাকবিনিময় তারপর শুকরিয়া আদায় করতেন।

এশা থেকে মধ্যরাত

জামায়াতে নামাজ শেষ করে রাসূল (সাঃ) মসজিদ থেকে ফিরে এসে স্ত্রীদের সাথে অল্পক্ষণ পারিবারিক আলোচনা করতেন,মাঝেমাঝে নিকট সাহাবীদের বাসায় যেতেন এবং অন্যদের তিলাওয়াত শুনতেন।অতঃপর ঘরে ফিরে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেন এবং স্ত্রীর সাথে রাত্রীযাপন করতেন।

মধ্যরাত থেকে ফজর

অর্ধরাত্রিতে রাসূল (সাঃ) জেগে উঠে মিসওয়াক করতেন,অজু করে আকাশের দিকে তাকাতেন,সূরা আল ইমরানের শেষ দশ আয়াত পড়তেন এবং অনেক লম্বা সময় ধরে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন।এরপর বিতির আদায় করে কবর জিয়ারত করতেন তারপর ঘরে ফিরে ফজরের আগ পর্যন্ত ঘুমিয়ে নিতেন।

এখন স্বল্প এই আলোচনার প্রেক্ষিতে এই রুটিন ব্যক্তিগত জীবনে প্রয়োগ করার কিছু পরামর্শ দিবো।যদিও রাসূল (সাঃ) এর ব্যক্তিগত কোন রুটিন ছিলোনা,উপরোক্ত বর্ণনা বিভিন্ন হাদিস থেকেই নেওয়া।রাসূল (সাঃ) তার সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করেছেন এবং ধর্ম ও জীবনের প্রতি একনিষ্ঠ ছিলেন।

১. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সাথে নিজের রুটিন খাপখাইয়ে নিন,ধর্মকে কেন্দ্র করে জীবন পরিচালনা করুন।

২.রাসূল (সাঃ) এর একাধিক স্ত্রী-সন্তান ছিলো মানে তিনি একজন স্বামী ছিলেন,বাবা ছিলেন,মসজিদের ইমাম,এছাড়াও সমাজপ্রধান,রাষ্ট্রনায়ক,আবার সেনাধ্যক্ষও ছিলেন,আর যা না বললেই নয় তিনি ছিলেন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল।লক্ষ্য করুন তিনি এতসব দায়িত্ব কীভাবে সামলাতেন যেখানে অধিকাংশ সময় ইবাদতে কাটাতেন?

এক্ষেত্রে যা বলা যায়-

নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং দায়ভার গ্রহণ করুন।সততা,ভালোবাসা,

সহানুভূতি,নিষ্ঠা,ঐক্য ও ঈমানের সাথে জীবন গড়ুন দেখবেন আপনার অজান্তেই আপনার কাজগুলো সুশৃঙ্খল সুচারুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে।

৩.জীবন তখনই প্রতিযোগিতাময় যখন আপনিও পারিপার্শ্বিক ছোয়ায় প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেন।ইসলামী জীবনপদ্ধতি অতি উচ্চ বিলাসবহুল নয় খুব সাধাসিধা যা রাসূল (সাঃ) এর সুন্নত থেকেই বুঝা যায়।অথচ আমরা আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন পথের যাত্রী এবং নিজেদের যুক্তিতর্কে নিজেরাই বিপথে যাচ্ছি,অথচ আমরা চাইলেই Minimalistic Living এর এই শিক্ষা কাজে লাগাতে পারি।

৪.নিজের পরিবার এবং সমাজকে পর্যাপ্ত সময় দিন এতে আপনার ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তা,পীড়ন দূর হয়ে যাবে।এখানেও আমরা উল্টো পথেই আছি,বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত বিকাশে স্বার্থপর ও বিচ্ছিন্ন হওয়া যেন একটা জেনেটিক রীতি হয়ে গেছে যেখানে 'আমি' অনেক শক্ত রুপে বিরাজ করে ফলে সমাজ,দেশ কিংবা জাতি কোথাও শান্তি নেই।আপনি বলতে পারেন,ধর্ম কাছে তাও শান্তি নেই কেন?

নিজেই ভাবুন একটু তুলনা করে,রাসূল সাঃ এর সমাজব্যবস্থা আর বর্তমানব্যবস্থা।এখন অবশ্য এটা বলতে কেউ দ্বিধাও করবেননা সেই যুগ অজ্ঞ ছিলো এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল মুসলিম!মনে রাখুন,ধর্ম তখনই শান্তি দেয় যখন ধর্ম মানুষের চর্মে না বরং মানস ভেদ করে চারু ছড়ায়।

৫.সবসময় আল্লাহকে স্মরণ করুন,আর কোন পাপ ভুলেও হবেনা আর যেদিন সত্যিকার ভাবে এটা পারবেন সেদিন আপনিও একজন Productive Muslim হতে পারবেন।মুসলমানরা পিছিয়ে যাচ্ছে কেন জানেন?

কারণ তারা না বুঝেই ধর্মচর্চা করে।না বুঝে কোরআন তিলাওয়াত,সিরাত পাঠ,হাদিস অধ্যয়ন!

যে সত্য আপনি বুকে ধারণ করেননা সেই সত্যের নেকিলোভী চর্চায় মেকী।বুঝে ধর্ম চর্চার মাঝে যে শান্তি তা আর কোথাও নেই।আমি আশাবাদী আপনারা রাসূলের নিত্যদিনের আলোকে নিজেদের আলোকিত করবেন

তথ্যসূত্রঃ

https://productivemuslim.com

আবদুল্লাহ আল ওয়াহাব এর মূল বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ "A Day in The Life of Muhammad"

Wednesday, December 26, 2018

মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধানঃSurely We Are Not Alone!

"Some where in the COSMOS there are some Aliens living in an Strange Extraterrestrial Planet"
প্রাণ কী কেবল পৃথিবীতেই আছে নাকি মহাবিশ্বের বিশালতায় লুকিয়ে আছে?এমন রোমাঞ্চকর প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর পাবেন পাঁচ পর্বের এই আর্টিকেলে।পড়তে থাকুন, ধন্যবাদ।



⭕ মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধানঃ-পর্ব-১

মহাবিশ্বের বিশালতা আমাদের আন্দাজের বাইরে।সেই মহাবিশ্বের মধ্যে কত ক্ষুদ্র এই আকাশগংগা,ত সৌরজগৎ।আর পৃথিবীতো ধারণার বাইরে।এই বিশালতার মধ্যে শুধু কি ক্ষুদ্রতর এই পৃথিবী তেই প্রাণ আছে???

এই প্রশ্ন খুব পুরনো। কিন্তু উত্তর অস্পষ্ট। এই পৃথিবীর বাইরে প্রাণ থাকার সম্ভাবনা থেকেই উদ্ভব >বহির্জাগতিক প্রাণ< শব্দটির।
বহির্জাগতিক প্রাণ (Extraterrestrial life) বলতে সেই জীবদের বোঝানো হয়, যাদের উদ্ভব এই পৃথিবীতে হয়নি বরং পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্বের অন্য কোথাও হয়েছে। বিশ্বের বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব আছে বলে অনেক বিজ্ঞানী দাবি করেছেন আর এই দাবি নিয়ে অনেক বিতর্কও রয়েছে। বর্হিজাগতিক প্রাণের অস্তিত্বের কথা বর্তমানে কেবল কাল্পনিক, কারণ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাইরে এই পর্যন্ত কোন জীবাণু অথবা অতি হ্মুদ্র জীবাণু আছে বলে, পরিষ্কার প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবুও অনেক বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে, এদের অস্তিত্ব রয়েছে। সাম্প্রতিক কিছু উল্কাপিণ্ডতে অতি প্রাথমিক ক্ষুদ্র জীবাণুর ছাপের মত কিছু একটা দেখা গিয়েছে, কিন্তু পরীক্ষার প্রমাণ এখনও চূড়ান্ত নয়। 
বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর বাইরে কিছু স্থান আছে যেখানে প্রাণ বিকশিত করতে পারে, অথবা আমাদের পৃথিবীর মত জীবন বর্তমান।
কিছু গ্রহকে স্পষ্টভাবে তাদের নক্ষত্রের কাছে বাসযোগ্য অঞ্চল পাওয়া গিয়েছে এবং সেখানে পানি থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে।
পৃথিবীর অনেক দেশের জনগণের মধ্যে দেখা রহস্যময় বিভিন্ন অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তু বা ইউএফও এর প্রতিবেদনগুলো বহির্জাগতিক প্রাণকে নির্দেশ করে।
>ড্রাক আন্দাজ< সমীকরণটি ব্যবহার হিসাব করতে গিয়ে বের করেছিল যে, আকাশগঙ্গাতে প্রায় ১০,০০০ গ্রহ আছে যাতে বুদ্ধিমান জীবের অস্তিত্ত্ব আছে। পৃথিবীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করার সম্ভবনাও অনেক।
পর্যাপ্ত প্রমাণের ঘাটতি এই বহির্জাগতিক প্রাণ থাকার সম্ভাবনা কে বিতর্কিত করে তুলেছে।তবে অধিকাংশের মতেই এর খোজ পাবার সম্ভাবনা ব্যাপক।

🔰তথ্যসূত্র
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Extraterrestrial_life



⭕ মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধানঃ-পর্ব-২

এই পর্ব দিয়ে শুরু করবো সম্ভাব্য বাসযোগ্য প্রাণমন্ডলে অবস্থিত বহিঃগ্রহের (habitable exoplanet) আলোচনা।
Planet:KEPLER-452b
গ্রহ:কেপলার-৪৫২ বি
দুরত্ব(from solar system ):১৪০০ ly
ভর:পৃথিবীর ৫ গুণ
ব্যাসার্ধ:পৃথিবী থেকে ৫০% বেশি
প্রদক্ষিন কাল: ৩৮৫ দিন 
নক্ষত্র থেকে গড় দুরত্ব:১.০৪ AU
হোস্ট স্টার:কেপলার ৪৫২
তাপমাত্রা:প্রায় সূর্যের সমান
ব্যাস:সূর্য থেকে ১০% বেশি
বয়স:৬ বিলিয়ন বছর 

২০১৫ সালের ২৩শে জুলাই, নাসার ওয়েবসাইটে একটা নতুন গ্রহ আবিষ্কার নিয়ে লেখা হয়।গ্রহটি কেপলার ৪৫২বি।গ্রহটিকে Earth 2.0 ডাকা হয়।যাকে বলে ২য় পৃথিবী। অনেকে বলে পৃথিবীর মাসতুতো ভাই।যাই হোক একে এমন ডাকার কারণ ও আছে বটে।এটির অবস্থান কেপলার ৪৫২ এর Habitable zone এ।
Habitable zone কি?
প্রাণের উৎপত্তি ও টিকে থাকার জন্য পানি প্রয়োজন। আর তাই নক্ষত্র থেকে গ্রহের দূরত্ব এমন হতে হবে, যেখানে পানির তরল অবস্থা সম্ভব। সেটাকেই Goldilock বা Habitable zone বলে।
এর আগেও হ্যাবিটেবল জোনের মধ্যে বেশ কিছু গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু কেপলার-৪৫২বি এর বৈশিষ্ট্যগুলো আরো বেশি আকর্ষণীয়। এখন পর্যন্ত নক্ষত্রের বাসোপযুক্ত সীমার মধ্যে যতগুলো গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে ছোট। ধারণা করা হয় গ্রহটি পাথুরে,স্থলজ এবং পানি ও আছে। এর নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণকাল পৃথিবী থেকে ৫% বেশি।এখানে পৃথিবীর চেয়ে অধিকতর ঘন বায়ুমণ্ডল আর সক্রিয় আগ্নেয়গিরি থাকার সম্ভাবনা আছে।
জন জেনকিন্স,যিনি কেপলার ৪৫২-বি এর আবিষ্কারক দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁর মতে আমরা কেপলার-৪৫২বি কে পৃথিবীর কাজিন হিসেবে চিন্তা করতে পারি, যার বয়স পৃথিবীর চেয়ে একটু বেশি, আকারেও সে পৃথিবীর চেয়ে একটু বড়। আমাদের পৃথিবীর ক্রমাগত পরিবর্তনশীল পরিবেশকে বোঝার জন্য এটি অনেক বড় একটা সুযোগ। চিন্তা করে দেখলে আপনি আশ্চর্য হতে বাধ্য যে কেপলার-৪৫২বি তার নিজের নক্ষত্রের বাসোপযুক্ত সীমার মধ্যে ৬ বিলিয়ন বছর কাটিয়েছে, যা পৃথিবীর চেয়েও ১.৫ বিলিয়ন বছর বেশি। তাই এতে প্রাণের উৎপত্তি আর বেড়ে ওঠার সব উপাদান আর প্রাণের বিবর্তনের উপযোগী পরিবেশ থাকতেই পারে।
সব মিলিয়ে বলা যায় হয়তোবা সেই গ্রহটিতে প্রাণ থাকতে পারে।
wait,wait, wait আমাদের তো তার কাছাকাছি পৌছাতে হবে বিশদভাবে জানতে হলে।
নিউ হরাইজন, যার গতি ৫৯০০০ কি:মি/ঘন্টা।সেই গতিতে গেলেও সেখানে যেতে লাগবে ১৪ মিলিয়ন বছর।
তবে হয়তো ১দিন এমন কিছু আবিষ্কৃত হবে যা দ্বারা আমরা সেখানে অভিযান চালাতে পারবো।হয়তো আমরা না, আমাদের পরের কোনো জেনারেশনের মানুষ।

🔰তথ্যসূত্র https://bigganjatra.org/earth-cousin-kepler452b/
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Kepler-452b



⭕ মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধানঃ-পর্ব-৩


পূর্ববর্তী পর্বে আলোচনা করেছি কেপলার ৪৫২বি নিয়ে।এই পর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো গ্লিজ-৬৬৭ সি c নিয়ে।

GLIESE-667C c
গ্রহ:গ্লিজ ৬৬৭ সি c 
দুরত্ব(from earth):23.62 ly প্রায়
অবস্থান :Scorpius নক্ষত্রমন্ডল
প্রদক্ষিনকাল:২৮ দিন
হোস্ট স্টার-গ্লিজ ৬৬৭ সি
তাপমাত্রা:৩৭০০ কে
বয়স:
ধরণ:red dwarf star

২১ শে নভেম্বর ২০১১ সালে ইউরোপ এর (HARPS)কর্তৃক আবিষ্কৃত হয় গ্রহটি।এটি ২৩ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।গ্লিজ ৬৬৭ নামক ত্রিপল স্টার সিস্টেম এর গ্লিজ ৬৬৭ সি নক্ষত্রের বাসযোগ্য স্থানে বা প্রাণমন্ডলে এর অবস্থান।অনেক habitable planet এর মধ্যে একে ৪থ earth like planet হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

গ্রহটি tidally locked.অর্থাৎ এর একদিক নক্ষত্রের দিকে মুখ করা। অন্যদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন। এই দুই দিকের মাঝামাঝি দিকে এর তাপমাত্রা ২৭৩ K হওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপক। এই তাপমাত্রা থাকায় গ্রহটিতে পানি থাকার সম্ভাবনা ও ব্যাপক।তাছাড়া পৃথিবী সূর্যের থেকে যে পরিমাণ আলো পায়, গ্লিজ ৬৬৭সি c ও তার নক্ষত্র থেকে এর ৯০% পায়।যা পানি থাকার জন্য উপযুক্ত।তাছাড়া এর বায়ুমন্ডল ও অন্যান্য দিক বিবেচনা করে অনেকেই বিশ্বাস করেন এতে প্রাণ ধারণ সম্ভব কিংবা প্রাণ এর অস্তিত্ব থাকতে ও পারে।তবে প্রমাণ না থাকায় এটি বিতর্কিত।

প্রাণ ধারণের অনুকুলতার পাশাপাশি এতে প্রতিকুলতাও আছে।কেপলার ৪৫২ বি এর থেকে এর অবস্থান অনেক কাছে।তাই কোনো একদিন হয়তো এতে অভিযান ও চালানো হবে।
এরকরম অনেক প্রাণমন্ডলে অবস্থিত গ্রহ প্রতিনিয়ত আবিষ্কার হচ্ছে, যা বহির্জাগতিক প্রাণ খুজে পাওয়ার সম্ভাবনাকে আরো গ্রহণ যোগ্য করে তুলেছে।
বিস্তারিত জানতে সূত্রসমূহে ভিজিট করুন।
এই গ্রহ সম্পর্কিত প্রশ্ন করতে পারেন।উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
পরের পর্বে অন্য এক প্রাণমন্ডলে অবস্থিত গ্রহ নিয়ে আলোচনা করবো।

🔰তথ্যসূত্র:
https://www.mn.uio.no/astro/english/research/news-and-events/news/astronews-2012-02-17.html
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Gliese_667_Cc


⭕ মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধানঃ-পর্ব-৪

TRAPPIST-1system
২০১৫ সালে চিলির কিছু গবেষক আবিষ্কার করেন একটা নক্ষত্রকে ঘিরে ৩ টি আবর্তমান গ্রহ।এটির নামকরণ করা হয় খ্রিষ্টান দেবতাদের নামানুসারে ট্রাপিস্ট-১ সিস্টেম।
পরে ২০১৭ সালের ২২ শে ফেব্রুয়ারি নাসা থেকে জানা যায় আরও ৪টা গ্রহ একে কেন্দ্র করে ঘুরছে এবং সে ৭ টির মধ্যে নুন্যতম ৩ টি প্রাণমন্ডলে অবস্থিত। অনেক পত্রপত্রিকা এবং টেলিভিশন এ এই সম্পর্কে প্রচার ও হয়।

ট্রাপিস্ট-১ এর গ্রহ গুলোর নামকরণ করা হয় ট্রাপিস্ট-১ এ,বি,সি,ডি,ই,এফ,জী।
ট্রাপিস্ট-১
দুরত্ব :৩৯ আলোকবর্ষ (১২ পারসেক)
অবস্থান :কুম্ভ তারকামন্ডল(Aquarius)
হোস্ট স্টার:ট্রাপিস্ট-১
ভর:সূর্যের ৮%
ব্যাসার্ধ :১১ %
ধরণ:ultra cool red dwarf

নক্ষত্রটির বৈশিষ্ট্য দেখে এর প্লেনেটারি সিস্টেম থাকাটা অবাক ছিল।
অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন এর গ্রহ গুলোর ৩/৪ টা পাথুরে,স্থলজ ও সমুদ্রাবৃত।
পানি থাকার প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় ৩১ আগস্ট স্পাইটজার স্পেস টেলিস্কোপ দারা।তারপর একে একে জানা যায় এদের মধ্যে ই, এফ, জী তে বায়ুমণ্ডল থাকার সম্ভাবনা।
নভেম্বর ২০১৮ সালে প্লেনেটারি সিস্টেম এর** ই** গ্রহটি সম্পর্কে গবেষকরা বলেন,"ই গ্রহটি সেরা আমাদের পরবর্তী সকল গবেষনা চালানোর জন্য"।তাছাড়া ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ ও স্পাইটজার স্পেস টেলিস্কোপ আরো গবেষণা চালাচ্ছে।
৩৯ আলোকবর্ষ তুলনা মুলক কম হওয়ায় এতে আরো অভিযান চালানোর সম্ভাবনা ব্যাপক।
পানি, স্থলজ ও বায়ুমন্ডল এর দিক বিবেচনা করলে এটি হয়তো এক সম্ভাবনাময় প্লেনেটারি সিস্টেম।

🔰তথ্যসূত্র:
http://www.kalerkantho.com/amp/print-edition/last-page/2017/02/24/467190
https://bigganbortika.org/trappist-1/
https://en.m.wikipedia.org/wiki/TRAPPIST-1e
https://en.m.wikipedia.org/wiki/TRAPPIST-1



⭕ মহাবিশ্বে প্রাণের সন্ধানঃ-পর্ব-৫

আগের পর্বগুলোতে কিছু বহি:গ্রহ(exoplanet)এবং প্লেনেটারি সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করেছি।

ঘুরে ফিরে এক ই কথা কেপলার ৪৫২ বি, গ্লিজ ৬৭৭সি সি,ট্রাপিস্ট-১.... বৈশিষ্ট্য গত ভাবে ভিন্ন হলেও শেষমেষ হয়তো,সম্ভাবনা আছে,may be এই সব শব্দ ব্যবহার।
কিন্তু কতটুকু সম্ভাবনা আছে???বহির্জাগতিক প্রাণ পাবার কিংবা প্রাণযোগ্য কোনো প্রশ্নহীন গ্রহ পাবার???
(SETI) তাদের নিরন্তর গবেষনা ও নানান অভিযান চালচ্ছে ভিনগ্রহে প্রাণ খোজার জন্য ও বাসোপযোগী গ্রহ এর সন্ধানে।১৯৬০ সাল থেকে বর্তমানে পেয়েছে অনেক বিস্ময়কর তথ্য ও।Wow! সিগনাল তার মধ্যে অন্যতম।যার মানে এখনো উদঘাটন হয়নি।তাছাড়া আরো অভিযান চালাচ্ছে SETI.
আর্জেন্টিনার বিরূপ পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার বেচে থাকা আরো বিস্ময়কর। এমনকি অক্সিজেনহীন পরিবেশে বেচে থাকারর নিদর্শন ও আছে।শুধু হাইড্রোজেন এ বেচে থাকা আমাদের বলে ভিনগ্রহে অক্সিজেন থাকতে হবে তা নয়। তাছাড়া ও জীব থাকতে পারে।

গবেষকদের মতে আমাদের আকাশগঙ্গাতেই রয়েছে কয়েকহাজার এর অধিক প্রাণমন্ডলে অবস্থিত গ্রহ।তবে আবিষ্কৃত সকল এর ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনা থাকলেও তা পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত হয়ে বলা জায় নি।
আমরা মঙল এ কত অভিযান চালাচ্ছি প্রাণের খোজ করতে কারণ তা খুব কাছে।মঙ্গল এর চেয়ে অনেক গুণ সম্ভাবনাময় গ্রহ তে অভিযান চালানো যাচ্ছে না দুরত্বের কারণে।তবে একসময় মঙ্গল এ অভিযান কাল্পনিক ছিল।আজ তা সম্ভব হয়েছে।একদিন খুব দুর দুরান্তে ও অভিযান চালানো যাবে।
আমরা নাকি মহাবিশ্বের এক নগন্য অংশ explore করেছি। তাতেই আমরা পেয়েছি Alpha centauri b এর মত মাত্র ৪ আলোকবর্ষ দুরের হ্যাবিটেবল প্লেনেট।কিংবা কেপলার ১৮৬বি এবং আরো অনেক হ্যাবিটেবল প্লেনেট।
তাছাড়া পূর্ববর্তী পোস্ট গুলোতে এ উল্লেখিত গ্রহ গুলো কত সম্ভাবনাময়।
যদি আমরা চিন্তা করি যে, ১৯৯৫ সালে যেখানে প্রথম habitable exoplanet আবিষ্কৃত হয়।তার ২০/২৫ বছরেই আমরা পেয়েছি কত সম্ভাবনাময় গ্রহ।
আরো সামনে উন্নত হবে প্রযুক্তি এবং আমাদের খোজার ধরণ ও বদলাবে,তখন হয়তো এমন কোনো গ্রহের খোজ পাবো যে গ্রহ অনেক গ্রহণযোগ্য হবে প্রাণ থাকার বা প্রাণ ধারণ করার।

তাছাড়া অনেকে বিভিন্ন আবিষ্কার এর ক্ষেত্রে কুরআন এর ইংগিত থাকলে তাকে বিশ্বাসযযোগ্য মনে করেন তার একজন আমি ও।
কুরআন এর ৪২:২৯ এ আছে মহান আল্লাহ আকাশ এবং যমীনের মাঝে এই দুইয়ের মধ্যখানে অনেক জায়গাতেই জীব জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন।

এক্ষেত্রে আমার বিশ্বাস মহাবিশ্বের কোটি কোটি গ্যালাক্সির অগনিত নক্ষত্রের অগণিত গ্রহের মধ্যে একমাত্র একটি গ্রহেই প্রাণ থাকবে এটি বেমানান। আরো অনেক পৃথিবী(এর ন্যায় গ্রহ) আছে এই মহাবিশ্বে।এবং একদিন প্রমাণ ও পাওয়া যাবে।
🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫🎫

লেখকঃ-সজীব হোসেন
এডিটরঃ-মাঈন উদ্দিন

Monday, November 5, 2018

বিবর্তনের ফলে প্রাণীরা কী ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে?


চিত্রঃ১(প্রাণীরা বিবর্তনের ফলে আকৃতিতে ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে)
৮০ ফুট দৈর্ঘের সাপ,৪০ ফুট দৈর্ঘের কুমির কিংবা ২৬ ফুট চওড়া পাখা বিশিষ্ট পাখি!কী মনে হয়,এসব প্রাণীর অস্তিত্ব থাকা কী অসম্ভব?হ্যাঁ,এখনকার জন্য অসম্ভব হলেও সেই ৪৫ মিলিয়ন বছর আগে কিন্তু এদের অস্তিত্ব ছিল। ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে অতিকায় ডাইনোসর দের বিলুপ্তির পর এরা সুযোগ পেয়ে অতিকায় হয়ে ওঠেছিল।কিন্তু এ ধারা চলমান থাকেনি,প্রজাতিগুলো বিবর্তনের ধারায় কেন জনি আকারে ক্রমশ ছোট হয়ে আসতে থাকে(মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে চলমান)।
কী এমন হয়েছিল যার ফলে প্রাণীদের আকার এমন ছোট হতে শুরু করলো এবং কী কারণে সেই সময়ে(৪৫ মিলিয়ন বছর আগে) প্রাণীগুলো এতো অতিকায় হতে পেরেছিল?
চিত্রঃ-২(ডাইনোসর)
জীবাশ্মবিদ এবং জীববিজ্ঞানীরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এ বিষয় নিয়ে নিজেদের গবেষণার অনেক অনুকল্প উত্থাপন করেছিলেন তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল Cope's Rule যেখানে বলা হয়েছে,“প্রাণীগুলো বিবর্তনের ধারায় ক্রমশ বড়ই হতে থাকে।”কিন্তু অনেক বছর পর Jablonski নামের আরেক জীববিজ্ঞানী জনপ্রিয় এই থিওরিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।তিনি তার দীর্ঘ ১০ বছরের পর্যবেক্ষণ থেকে এবং ১০০০ প্রজাতির উপর ৬০০০ পরীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তেই আসেন যে,“There is no more tendency for species to become bigger as they evolve.”বুঝলেন তো,Cope's Rule ভুল ছিল এবং Jablonski তার নতুন তত্ত্ব দিয়ে তা শুধরিয়ে দেন।তার মতে, বিবর্তনের ধারায় প্রাণীগুলো আকৃতিতে বড় নয় বরং আকৃতি ছোট রাখার প্রতিই বেশি আগ্রহী এবং এর বেশ কিছু যৌক্তিক কারণ ও তিনি দেখিয়েছেন।আকৃতি বড় হলে প্রধান যে সমস্যাগুলো হয়ঃ- 
♦বেশি খাদ্য তথা শক্তির প্রয়োজন হয়
♦প্রজনন শ্লথ বা মন্থর হয়
♦শিকার,চলাফেরা ও ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা হয়
অপরদিকে এর বিপরীত সুবিধাগুলোই ছোট প্রাণীরা পেয়ে থাকে যা তাদের অভিযোজনে অন্যতম সহায়ক।তাই সেসময় থেকেই প্রাণীকুল(Biota) বুঝতে শুরু করেছিল যে ছোট আকৃতিই তদের জন্য সহায়ক কারণ গণবিলুপ্তিতে(Mass Extinction) বড় প্রাণীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির প্রাণীরা নিজেদের বাঁচাতে পারতো এবং পরবর্তীতে দ্রুত অভিযোজিত হতে পারতো।মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে বিবর্তনের এতো ধাপ পেরিয়ে আজকের প্রজাতিগুলোর দিকেই দেখুননা একবার,তারা কত ধূর্ত অথচ আকৃতিতে পূর্বেকার প্রাণীগুলোর চেয়ে বহুগুণ ছোট।

এখন প্রশ্ন হলো,এভাবে আকার হ্রাস পাওয়ার ক্ষেত্রে কী কেবল প্রাণীদের তীব্র আকাঙ্ক্ষাই দায়ী নাকি অন্য কোন প্রভাবক আছে এক্ষেত্রে?
চিত্রঃ-৩(আকারের ক্রমহ্রাস)
নিঃসন্দেহে আকাঙ্ক্ষা একটা বড় কারণ কিন্তু আরো বেশ কিছু কারণ আছে যা প্রাণীদের এই দৈহিক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছিল।তবে আগে বলে নিই সেসময়ের(Prehistoric Time) বড় প্রাণীগুলো কেন বা কীভাবে এত অতিকায় হয়ে ওঠেছিল;নিশ্চয় এর বিপরীত কারণগুলোই হবে ছোট প্রাণীদের ছোট হওয়ার কারণ।
এবার দেখা যাক অন্যান্য সেই কারণগুলোঃ-
★ বায়ুতে Oxygen এর মাত্রা-সেসময় বায়ুতে প্রায় ৩৮% অক্সিজেন ছিল যা প্রাণীদের Biomechanical Limit অতিমাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং এটি তাদের বৃদ্ধি দ্রুততর করতো, দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সুযোগ ও পেত।
★ যথেষ্ঠ খাবার ছিল(Food Resources)
★ প্রাণীদের আবাসের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হতোনা,অনেক জায়গা ছিল(Land Mass)
★ নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা ছিল
★ পরিবেশে প্রচুর বনভূমি এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক অবস্থা বিরাজমান ছিল ফলশ্রুতিতে প্রাণীরা নিজের মতো করে স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়ে উঠত।
চিত্রঃ-৪(প্রাগৈতিহাসিক অতিকায় প্রাণীরা)
এবার ভেবেই নিন কেন আজকের প্রাণীরা আকৃতিতে ছোট হতে একপ্রকার বাধ্য।

এখন আরেকটা প্রশ্নের উদয় হয় এখানে,কখনো যদি অতীত সেই পরিবেশ প্রাণীরা ফিরে পায় তবে কী তারা আগের মতো অতিকায় হয়ে উঠবে?

উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ এবং না(বিতর্কিত এবং অনিশ্চিত)।এ ধরনের বিবর্তন হতে প্রায় মিলিয়ন মিলিয়ন বছর লেগে যায় এবং অতীত সেই প্রাকৃতিক অবস্থাও আর ফিরে আসবেনা তবে কিছু কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে(লক্ষ-কোটি বছর+) কিছু প্রাণীর বিবর্তন নিশ্চিত এমনকি মানুষের ক্ষেত্রেও।
অনেক লম্বা সময়ই বটে,জানিনা হয়ত সেদিন আসতে আসতে আমরা হয় মঙ্গল গ্রহের বাসিন্দা(Martian) হবো না হয় বিলুপ্ত(Extinct) হয়ে যাবো।
চিত্রঃ-৫

সারকথা

বিবর্তনের ধারায় প্রাণীদের আকার ছোট বা বড় হওয়া অনেক নিয়ামক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।একটি উপযুক্ত পরিবেশের উপরই সব নির্ভর করছে।Prehistoric Era তে প্রাণীরা অতিকায় ছিল কারণ তারা উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে প্রাণীরা বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নেয় এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা ও পরিবেশের বিরুপতা তাদেরকে ধীরে ধীরে ছোট আকৃতি পেতে সাহায্য করে যা অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক ছিল।বিবর্তনের প্রভাব সব প্রাণীর ক্ষেত্রে একই ছিলোনা অবশ্য এর কিছু কারণও ছিল।জলভাগের(Aquatic) প্রাণীর চেয়ে স্থলচর প্রাণীদের(Terrestrial) উপর বিবর্তনের প্রভাব প্রকট ছিল।


ধন্যবাদ
লেখকঃ-Myin Uddin

কমেন্টে নিজেদের প্রশ্ন করতে পারেন


Tuesday, August 7, 2018

The SPITZER-"অদম্য স্পিটজারের গল্প"

Spitzer Space Telescope 

অদম্য স্পিটজারের গল্প!

ট্রাপিস্ট -১  স্টার সিস্টেমের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? হ্যাঁ, এই স্টার সিস্টেমই সাম্প্রতিক সময়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মনে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি করেছে! ট্রাপিস্ট-১ কে কেন্দ্র করে যে ৭টি গ্রহ ঘুরছে, তার মধ্যে ৩টিই রয়েছে হ্যাবিটেশনাল জোনে। ফলে এখানে সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে কোনো প্রাণের কিংবা মানবজাতির ভবিষ্যৎ আন্তঃনাক্ষত্রিক যাত্রার একটি গন্তব্য হতে পারে স্টার সিস্টেম।

এই আবিষ্কারের নেপথ্যে যে মহানায়ক ছিল, তার নাম স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপ! ৭২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ২০০৩ সালের ২৫ আগস্টে নাসার গ্রেট অবজারভেশান প্রোগ্রামের ৪র্থ এবং শেষ মিশন হিসেবে স্পিটজারকে ফ্লোরিডার কেপ কেনারেভাল স্পেস সেন্টার থেকে ডেল্টা-২ রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়।

অবলাল রশ্মি ক্যাপচার করে তাপীয় উৎস, অবলাল রশ্মি ( infrared ray ) নির্গত করে এমন মহাজাগতিক বস্তুর বর্ণালীবীক্ষণ করা এবং ছবি তোলা ছিল ১৮৭৭ পাউন্ডের টেলিস্কোপটির প্রধান কর্মযজ্ঞ! সাধারণত মহাকাশ থেকে অবলাল রশ্মি পৃথিবীতে আসতে আসতে বায়ুমণ্ডলেই বেশিরভাগ শোষিত হয়ে যায়। তাই স্পিটজারের মতো স্পেস টেলিস্কোপ তৈরি করা জ্যোতির্বিদদের কাছে খুবই দরকারি ছিল।

নাসা ঐতিহ্যগতভাবেই প্রত্যেকটা স্পেস টেলিস্কোপের নামকরণ কোনো বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানীর নামে করে। স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয় জ্যোতির্বিদ লেম্যান স্পিটজারের নামে। ১৯৪০ সালের দিকে লেম্যান স্পেস টেলিস্কোপের ধারণা দেন। রকেট সায়েন্স এবং জ্যোতির্বিদ্যায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন এই প্রতিভাবান!

স্পিটজারের মিশন ব্যাপ্তিকালের পরিকল্পনা করা হয় ২.৫ থেকে ৫ বছরের জন্য। প্রাথমিক মিশন চলে ৫ বছর, ৮ মাস, ১৯ দিন পর্যন্ত! স্পিটজারের অনুসূর ও অপসূর যথাক্রমে ১.০০৩ এবং ১.০২৬ জ্যোতির্বিদ্যার একক।

ইনফ্রারেড অ্যারে ক্যামেরা, ইনফ্রারেড স্পেক্ট্রোগ্রাফ এবং মাল্টিব্যান্ড ইমেজিং ফটোমিটার  নিয়ে স্পিটজারের কাজ করার জন্য প্রয়োজন ছিল প্রায় -১৬৮° সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা বজায় রাখতে ব্যবহৃত হতো তরল হিলিয়াম গ্যাস। ১৫ মে, ২০০৯ সালে তরল হিলিয়ামের সরবরাহ শেষ হয়ে যায়। মহাবিপদ! এদিকে বিজ্ঞানীদেরও স্পিটজার মিশনের ব্যাপ্তিকাল প্রসারিত করবার ইচ্ছে। 
জ্যোতির্বিদরা অসাধারণ একটি পরিকল্পনা করলো। পরিকল্পিত এই মিশনের নাম দেওয়া হলো স্পিটজার ওয়ার্ম মিশন। উপযুক্ত তাপমাত্রার অভাবে আগেই বেশিরভাগ যন্ত্রাংশ অচল হয়ে গিয়েছিল। তবে নিম্ন তাপমাত্রায় তারা দুটি ইনফ্রারেড অ্যারে ক্যামেরাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছিল। 
প্রায় সকল গ্রহই সব ধরণের আলো শোষণ করলেও বেশিরভাগ বিকিরণ করে অবলোহিত আলোয়। তাই এক্সোপ্ল্যানেট হান্টে স্পিটজার দারুণভাবে সফল হয়! এছাড়াও গ্যালাক্সি, নেবুলা, নক্ষত্রদের অবলাল আলোয় অপূর্ব ছবি তুলে ইনফ্রারেড এস্ট্রোনমিতে ব্যাপক অবদান রাখে স্পিটজার।

স্পিটজার আমাদের সৌরজগতের বাইরের অন্য স্টার সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য এক্সোপ্ল্যানেটের ছবি তুলতে সক্ষম হওয়ায়  স্পেস টেলিস্কোপদের ইতিহাসে এটি  অন্যতম বিস্ময়! স্পিটজারের আগে অন্য টেলিস্কোপগুলো কেবল ট্রানজিট সিস্টেম ব্যবহার করে গ্রহ শনাক্ত করা গেছে, কিন্তু ছবি তোলা যায়নি। স্পিটজার এই কাজ প্রথমবারের মতো করে প্লানেটারি এস্ট্রোনমিতে অভাবনীয় অবদান রেখেছে। ২০০৫ সালে স্পিটজার একটি এক্সোপ্ল্যানেটের চারপাশে সৃষ্টি হওয়া নতুন একটি বলয় শনাক্ত করে, যা গ্রহের উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞানীদের যথেষ্ট ভাবায়। ২০০৬ সালে স্পিটজার একটি এক্সোপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার ম্যাপ তৈরি করতে সক্ষম হয়। 
মহাবিশ্বের রক্তিম সরণের কারণে বিগ ব্যাংয়ের প্রায় ১০ কোটি বছর পরের একটি তারার আলো শনাক্ত করতেও সক্ষম হয় স্পিটজার স্পেস অবজারভেটরি!

স্পিটজারের পর বিজ্ঞানীরা এক্সোপ্ল্যানেট নিয়ে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে পড়ে। ফলে নির্মিত হয় কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ। এক্সোপ্ল্যানেট শিকারে সর্বোচ্চ সফল স্পেস টেলিস্কোপ বলা হয় কেপলারকে। পেজের স্পেস টেলিস্কোপ সিরিজের ১ম পর্ব ছিল এই কেপলার স্পেস টেলিস্কোপকে নিয়েই। 

ওহ...  প্রথমেই তো বলেছিলাম ট্রাপিস্ট-১ স্টার সিস্টেমে অবস্থিত গ্রহগুলোর কথা। এই স্টার সিস্টেমটি স্পিটজার আবিষ্কার করেছিল ২০১৬ সালে। ২০০৯ সালে যে টেলিস্কোপের আয়ু শেষ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল, সেই টেলিস্কোপটি ২০১৬ সালে এসে এতো বড় একটি আবিষ্কার করলো। সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে অদম্য স্পিটজার এখনো কাজ করে চলছে মহাকাশ শিকারে!

Here's Some PDF Books About Spitzer Space Telescope.....





Tuesday, July 31, 2018

"তারা-পরিচিতি"→(ডাউনলোড করে নিন এর PDF VERSION)!


তারা-পরিচিতি

☼☼☼
তারা-পরিচিতি' বাংলাদেশী জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশল শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল জব্বার রচিত একটি জ্যোতির্বিজ্ঞান গ্রন্থ। এই বইয়ে আধুনিক ৮৮টি তারামণ্ডলের সবগুলোর বর্ণনা, পৃথিবীর আকাশে তাদের অবস্থান এবং তাদের অন্তর্ভুক্ত তারার তালিকা উল্লেখিত আছে। বইটি প্রথম ১৯৬৭সালে প্রকাশিত হয়েছিল। 
আমাদের দেশে জ্যোতির্বিজ্ঞান তথা বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে যেকোন ধরনের আগ্রহে প্রতিবন্ধকতা অনেক। পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার কাজে তো বটেই, এমনকি প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহের জন্য বইপত্র বা সাময়িকী পাওয়া খুবই কঠিন। প্রয়াত অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল জব্বার বাংলায় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য তারা পরিচিতি বইটি রচনা করে এক বিরাট শূণ্যস্থান পূরণ করেছিলেন। 

বইটি খুব দুর্লভ এখন আবার 'রাতের আকাশের পরিচিতি' নিয়ে এর চেয়ে ভালো বই বাংলায় এখনো নেই!তাই সকলেই এটার pdf version পেয়েছি আমি।
এখন তোমরা সিম্পলি এই লিংক থেকে বইটার একদম স্ক্যান করা pdf version ডাউনলোড করে নিতে পারবা!

HERE'S THE DOWNLOAD LINKঃ-
https://drive.google.com/file/d/1R54FNj3XAaercroQBTkV2fWQkaACsO_3/view?usp=drivesdk

Thanks A Lot
basrimyin@gmail.com


Friday, June 1, 2018

যেকোনো সংখ্যার বর্গ বের করে ফেলো-(JUST IN 10s)!

ক্যালকুলেটর ছাড়া যে কোন সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করার খুব কার্যকর একটি টেকনিক!

খেয়াল করুন- প্রথমে যখন নিচের টেকনিকটি পড়বেন তখন হয়ত কারো কাছে একটু ঝামেলার মনে হতে পারে কিন্তু ৩/৪ টি অংক করলে দেখবেন আসলেই বিষয়টি অনেক মজার। ৩০ থেকে ৭০ পর্যন্ত যে কোন সংখ্যার বর্গ (square) বের করতে মাত্র ১০/১২ সেকেন্ড লাগবে!
যে সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করবেন সেটি যদি ৫০ এর চেয়ে বড় হয় তাহলে যত বেশি বড় হবে তার সাথে ২৫ কে যোগ করতে হবে তখন যা পাওয়া যাবে তা হল প্রথম দুটি অংক। তারপর ৫০ আর ঐ সংখ্যার পার্থক্যের বর্গ হবে শেষ দুটি অংক (দুই অংকের বেশি বা কম হলে কি করবেন তা পরে বলা হয়েছে)
১. ৫৫ এর বর্গ কত?
Step-1: ২৫+৫=৩০ (যেহেতু ৫৫ হল ৫০ এর চেয়ে ৫ বেশি তাই ২৫ এর সাথে ৫ যোগ করা হল)
Step-2: ৫*৫=২৫ (যেহেতু পার্থক্যের বর্গ করতে হবে)
তাহলে ৫৫ এর বর্গ হল ৩০২৫।

২. ৫৯ এর বর্গ কত?
Step-1: ২৫+৯=৩৪ (প্রথম দুটি অংক)
Step-2: ৯*৯=৮১ (শেষ দুটি অংক)
সুতরাং ৫৯ এর বর্গ হল ৩৪৮১।

৩. ৫৩ এর বর্গ কত?
Step-1: ২৫+৩=২৮ (যেহেতু ৫৩ হল ৫০ এর চেয়ে ৩ বেশি তাই ২৫ এর সাথে ৩ যোগ করা হল)
Step-2: ৩*৩=৯ (যেহেতু পার্থক্যের বর্গ করতে হবে)
খেয়াল করুন, এখানে শুধু ৯ বসালে হবে না কারণ ৩২ থেকে ৯৯ পর্যন্ত সকল সংখ্যার বর্গ হল চার অংক বিশিষ্ট। তাই ৯ এর আগে একটা ০ বসাতে হবে।
তাহলে ৫৩ এর বর্গ হল ২৮০৯।

৪. ৬২ এর বর্গ কত?
Step-1: ২৫+১২=৩৭ (যেহেতু ৬২ হল ৫০ এর চেয়ে ১২ বেশি তাই ২৫ এর সাথে ১২ যোগ করা হল)
Step-2: ১২*১২=১৪৪ (যেহেতু পার্থক্যের বর্গ করতে হবে)
এখানে খেয়াল করুন, ৩২ থেকে ৯৯ পর্যন্ত সকল সংখ্যার বর্গ হল চার অংক বিশিষ্ট। তাই প্রথম দুটি সংখ্যা হল ৩৭ কিন্তু তারপর যদি ১৪৪ বসাই তাহলে সেই বর্গটি ৫ অংকবিশিষ্ট সংখ্যা হয়ে যাবে যা সম্ভব নয়। সেজন্য শেষের ২ অংক অর্থাৎ ৪৪ বসিয়ে তার আগের ১ কে প্রথম দুই অংকের অর্থাৎ ৩৭ এর সাথে যোগ করতে হবে। তাহলে ৬২ এর বর্গ হবে ৩৮৪৪।
আবার যে সংখ্যার বর্গ নির্ণয় করবেন সেটি যদি ৫০ এর চেয়ে ছোট হয় তাহলে যত ছোট হবে ২৫ থেকে তত বিয়োগ করতে হবে তখন যা পাওয়া যাবে তা হল প্রথম দুটি সংখ্যা। তারপর ৫০ আর ঐ সংখ্যার পার্থক্যের বর্গ হবে শেষ দুটি সংখ্যা।
৫. ৪৮ এর বর্গ কত?
Step-1: ২৫-২=২৩ (প্রথম দুটি অংক)
Step-2: ২*২=০৪ (শেষ দুটি অংক)
সুতরাং ৪৮ এর বর্গ হল ২৩০৪।

৬. ৪২ এর বর্গ কত?
Step-1: ২৫-৮=১৭ (প্রথম দুটি অংক)
Step-2: ৮*৮=৬৪ (শেষ দুটি অংক)
সুতরাং ৪২ এর বর্গ হল ১৭৬৪।

৭. ৩০ এর বর্গ কত?
Step-1: ২৫-২০= ৫
Step-2: ২০*২০=৪০০ (যেহেতু ৪০০ সংখ্যাটি ৩ অংকবিশিষ্ট হয়ে গেছে তাই শেষের দুটি অংক বসবে আর প্রথম অংকটিকে অর্থাৎ ৪ কে আগের মত ৫ এর সাথে যোগ করে নিতে হবে)
সুতরাং ৩০ এর বর্গ হল ৯০০।

জানার আছে অনেক কিছু-ত্রিভুজ(TRIANGLE)

ত্রিভুজ নিয়ে কিছু কথাঃ
================
ত্রিভুজ হল সমতলের উপর অঙ্কিত একটি চিত্র যা তিনটি সরলরেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ।

ত্রিভুজের শ্রেণীবিভাগঃ-

★যদি ত্রিভুজের তিনটি বাহুই অসম হয়, তবে একে বিষমবাহু ত্রিভুজ বলে।
★আর কেবল দুই বাহু সমান হলে তাকে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ এবং সমদ্বিবাহু ত্রিভুজে সমান বাহুদ্বয়ের বিপরীত কোণগুলি সমান।
★তিনটি বাহুই সমান হলে তাকে সমবাহু ত্রিভুজ বলা হয়। সমবাহু ত্রিভুজের সবগুলি কোণ সমান।
★যে ত্রিভুজের একটি কোন সমকোণ তাকে সমকোণী ত্রিভুজ বলে।

 সমকোণী ত্রিভুজের সমকোণের বিপরীত বাহুর নাম অতিভুজ। 
পিথাগোরাসের বিখ্যাত উপপাদ্য অনুযায়ী সমকোণীত্রিভুজের অতিভুজের বর্গ এর সমকোণ-সংলগ্ন দুই বাহুর বর্গের যোগফলের সমান। অর্থাৎ c^2=a^2+b^2

ত্রিভুজের ভিতরের কোনগুলিকে অন্তঃস্থ কোণ বলে, আর ত্রিভুজের বাহুগুলিকে বাড়িয়ে দিয়ে যে কোণগুলি পাওয়া যায়, তাদেরকে হলে বহিঃস্থ কোণ। ত্রিভুজের তিনটি অন্তঃস্থ কোণের সমষ্টি ১৮০°। এছাড়াও, যেকোন বহিঃস্থ এর অন্তঃস্থ বিপরীত কোণদ্বয়ের সমষ্টির সমান।

ত্রিভুজের কোন শীর্ষবিন্দু থেকে বিপরীত বাহুর মধ্যবিন্দু পর্যন্ত আঁকা রেখাকে বলা হয় ত্রিভুজটির একটি মধ্যমা। ত্রিভুজের তিনটি মধ্যমা একই বিন্দুতে ছেদ করে এবং এটি প্রতিটি মধ্যমার শীর্ষবিন্দু থেকে দুই-তৃতীয়াংশ দূরত্বে অবস্থিত। ত্রিভুজের কোন শীর্ষবিন্দু থেকে বিপরীত বাহুর উপর অঙ্কিত লম্বকে ঐ ত্রিভুজের উচ্চতা বলে।

দুইটি ত্রিভুজকে সর্বসম বলা হয় যদি এগুলি নিচের তিনটি শর্তের সেটের যেকোনটি পূরণ করে: 


  • (১) একটি ত্রিভুজের এক বাহু ও দুইটি কোণ অন্যটির অনুরূপ বাহু ও দুইটি কোনণর সমান;
  • (২) কোন একটি ত্রিভুজের দুই বাহু এবং এদের অন্তর্ভুক্ত কোণ অন্য ত্রিভুজটির দুই বাহু ও অন্তর্ভুক্ত কোণের সমান;
  • (৩) একটি ত্রিভুজের তিনটি বাহু অপর ত্রিভুজের তিন বাহুর সমান।


যদি একই সমতলে অবস্থিত দুইটি ত্রিভুজকে নিখুঁতভাবে একটির উপর আরেকটিকে বসিয়ে দেয়া যায়, তবে তারা সরাসরি সর্বসম। আর যদি বসানোর আগে একটিকে উল্টে নিতে হয়, তবে ত্রিভুজ দুটি বিপরীতভাবে সর্বসম
যদি দুইটি ত্রিভুজের একটির সবগুলি কোণ অন্যটির সবগুলি কোণের সমান হয়, তবে তাদেরকে সদৃশ ত্রিভুজ বলা হয় এবং এদের অনুরূপ বাহুগুলি সমানুপাতিক হয়।

ত্রিভুজের ক্ষেত্রফলঃ-


ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল এর ভূমি (b) ও এই ভূমির উপর অঙ্কিত উচ্চতার (h) গুণফলের অর্ধেক । যেকোন বাহুকেই ভূমি ধরা যায়। যদি ত্রিভুজটি সমবাহু হয়, তবে এর ক্ষেত্রফল , যেখানে a যেকোন বাহুর দৈর্ঘ্য। 
যদি কোন ত্রিভুজের তিনটি বাহু a, b এবং c হয়, তবে গ্রিক গণিতবিদ আর্কিমিডিসের দেয়া সূত্র অনুযায়ী এর ক্ষেত্রফল,S=\sqrt{s(s-a)(s-b)(s-c)},যেখানে;sত্রিভুজের পরিসীমার অর্ধেক s = ½ (a + b + c)।